সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) এবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেলেন। মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এক রাজকীয় আদেশে তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ।
রাজপরিবারশাসিত সৌদি আরবে পদাধিকার বলে বাদশাহই মন্ত্রিসভার প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী থাকছিলেন এতদিন। তবে সেই চর্চায় পরিবর্তন ঘটিয়ে পুত্র মোহাম্মদ বিন সালমানকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসালেন বাদশাহ সালমান।
প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ১৯৮৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। এমবিএস নিজেকে ডিজিটাল যুগে বড় হওয়া প্রথম প্রজন্মের অংশ হিসাবে দেখেন। সৌদি রাজপরিবারের অনেক রাজকুমারের মধ্যে তিনি একজন, যিনি কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক সম্পন্ন করেন। এরপরই কর্মজীবন শুরু হয় তার এবং বাবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন।
২০০৯ সালে পিতার বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন তিনি। রিয়াদ প্রদেশের গভর্নরও ছিলেন তিনি। এরপর প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হন। তিনি উপপ্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করে আসছিলেন। অবশেষে সৌদির ডি-ফ্যাক্টো নেতা হিসেবে পরিচিত হন এই সৌদি শীর্ষ নেতা।
একই সঙ্গে নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী করা হয়েছে তার ছোট ভাই খালিদ বিন সালমানকে। খালিদ উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন এতদিন। অন্য জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীদের স্বপদে বহাল রাখা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফায়সাল বিন ফারহান আল-সউদ, অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জাদান এবং বিনিয়োগমন্ত্রী খালিদ আল-ফাতিহ একই দায়িত্বে রয়েছেন।
তার সমর্থকরা বলছেন যে, বিন সালমানের সাহসী উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং শক্ত মনোভাব একটি অস্থিতিশীল অর্থনীতিকে বাঁচাতে খুবই প্রয়োজন। অপরদিকে, তার সমালোচকরা বলছেন তিনি স্বৈরাচারী, ক্ষমতার জন্য ক্ষুধার্ত এবং বেপরোয়া। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোহাম্মদ বিন সালমান কেমন দেশ পরিচালনা করবেন তা দেখার বিষয়। তবে দেশটির অর্ধেকের বেশি তরুণ বয়সী। এই প্রজন্মকে কাজে লাগাতে পারলে হয়তো ব্যতিক্রম কিছু ঘটবে দেশটিতে। কেননা, এমবিএস নিজেকে ডিজিটাল যুগে বড় হওয়া প্রথম প্রজন্মের অংশ হিসাবে দেখেন।
এছাড়া, প্রিন্স মোহাম্মদ সালমান এমন পদক্ষেপ নিচ্ছেন যা দেশটির মূল ভিতে নাড়া দিচ্ছে। সমাজ সংস্কার ও পরিবর্তন দেশটির ধর্মীয় বিধিনিষেধগুলো শিথিল করছে যা কয়েক দশক ধরে রক্ষণশীল ইসলামী সমাজকে ধারণ করে আসছিল। তিনি অপরিশোধিত তেলের রপ্তানিকারকদের ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং বিশ্বে তার স্থানকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করছেন। পর্যটনের মতো নতুন সেক্টরে উন্নয়নের জন্য জোর দেওয়াও তার গুরুত্বের তালিকায়। যদিও রাজনৈতিক দমন-পীড়নের অভিযোগও শোনা যায় তার বিরুদ্ধে।