লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ সিন্দুর্ণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনটি শ্রেণিকক্ষ। এর মধ্যে শিক্ষকরা বসেন একটি কক্ষে। আর একটি কক্ষ দখল করে মালামাল রেখেছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল হামিদ সরকার হামিদুল। বাকি একটি শ্রেণিকক্ষে একসঙ্গে চলছে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ সিন্দুর্ণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলেন, বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনে তৃতীয় শ্রেণির কক্ষে আমরা ভাগ করে করে পাঠদান করে আসছি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। দীর্ঘ চার বছরেও নিমার্ণ কাজ শেষ না করে উল্টো পুরাতন ভবনের একটি শ্রেণিকক্ষ দখল করে মালামাল রেখেছেন যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার আব্দুল হামিদ সরকার হামিদুল। ফলে এক শ্রেণিকক্ষেই একসঙ্গে চলছে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান। তিনজন শিক্ষক একটি কক্ষে একসঙ্গে তিনটি ক্লাস নিচ্ছেন। শিশু শ্রেণির ক্লাস হচ্ছে কখনো বারান্দায়, কখনো মাঠে খোলা আকাশের নিচে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শিউলি বেগম বলেন, প্রায় তিন বছর ধরে ঠিকাদারকে বিষয়টি নিয়ে আমরা বলেছি। কিন্তু তারা বিষয়টি আমলে না নিয়ে একটি শ্রেণিকক্ষ দখল করে মালামাল রেখেছেন। এতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া যাচ্ছে না। আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই।
দক্ষিণ সিন্দুর্ণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম মোল্লা জানান, বিষয়টি একাধিকবার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এবং প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগকে অবগত করা হলেও কোনো সফলতা আসেনি। তাই শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেব।
অভিযোগ উঠেছে, ওই নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ না হলেও অধিকাংশ টাকা উত্তোলন করেছেন ঠিকাদার ও হাতীবান্ধা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল হামিদ সরকার হামিদুল।
এ বিষয়ে জানতে আব্দুল হামিদ সরকার হামিদুলের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
হাতীবান্ধা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মিঠুন বর্মণ বলেন, শ্রেণিকক্ষে ঠিকাদারের মালামাল রাখার বিষয়টি আমি জানি না। শ্রেণিকক্ষ দখল করে রেখে মালামাল রাখা দুঃখজনক। আমি দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।
হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকৌশলী নজির হোসেন বলেন, বিষয়টি শুনে ঠিকাদারকে অনেকবার চাপ দিয়ে মালামাল সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়াও নতুন ভবনটি করার কথা বললেও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছেন না। তাই ঠিকাদারকে চাপ দিয়ে এ মাসেই নতুন ভবন খুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজির হোসেন বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।