দেশের রপ্তানি আয়ের ৮৪ শতাংশই আসে পোশাকশিল্প খাত থেকে। তবে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে এ খাত নিয়ে চরম শঙ্কা তৈরি হয়। বাতিল হয়ে যায় অনেক অর্ডার। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে স্বরূপে ফিরতে খুব বেশি দেরি হয়নি। অল্প সময়ের ব্যবধানে বাতিল হওয়া অর্ডারগুলো পুনরায় ফিরে আসতে থাকে। ফলে করোনার মাঝেও চমক দেখিয়েছে পোশাক খাত।
একইসঙ্গে বেড়েছে পরিবেশবান্ধব সবুজ কারখানা বা গ্রিন ফ্যাক্টরির সংখ্যাও। আগে থেকেই সবুজ কারখানার তালিকায় বিশ্বে শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ। এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও তিনটি কারখানার নাম। সেগুলো হলো- নরসিংদীর শারাফ অ্যাপারেলস ওয়াশিং অ্যান্ড ডায়িং, আশুলিয়ার দেবনাইর লিমিটেড অ্যান্ড অরবিটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেড ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা অ্যাপারেলস।
এ নিয়ে দেশে সবুজ কারখানার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৭১টি। এ তালিকায় নাম লেখাতে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আরও ৫৫০টি কারখানা। তৈরি পোশাক মালিক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন ‘ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডিজাইন (এলইইডি)’। এ সংগঠনটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কারখানাগুলোকে সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে।
ক্রেতারা কোনো কারখানা থেকে পোশাকপণ্য কেনার সময় এলইইডির গ্রিন ফ্যাক্টরির সার্টিফিকেট আছে কি না, তা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে থাকে।
এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডিজাইনের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে সুবজ কারখানা বা গ্রিন ফ্যাক্টরির সংখ্যা এখন ১৭১টি। এর মধ্যে প্ল্যাটিনাম ক্যাটাগরিতে রয়েছে ৫৩টি। এছাড়া গোল্ড ক্যাটাগরিতে ১০৪টি, সিলভারে ১০টি। আর সার্টিফাইড চারটি। তাছাড়া এখনো গ্রিন ফ্যাক্টরি হতে রেজিস্ট্রেশন বা পাইপলাইনে রয়েছে আরও ৫৫০টি কারখানা।
গ্রিন ফ্যাক্টরিতে আমাদের দেশ এখনো শীর্ষে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল।
তিনি বলেন, ‘পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার পাশাপাশি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সক্ষমতা বাড়াতে এলইইডির সার্টিফিকেট গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রথমেই জানতে চায়, তাদের পোশাকপণ্য কোথা থেকে এসেছে? কোন পরিবেশে তৈরি হয়েছে? সেখানে কীভাবে উৎপাদন হয়েছে বা কোনো ধরনের ক্ষতিকর কেমিক্যাল আছে কি না? এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে এলইইডি সার্টিফিকেটের বিকল্প নেই।’