নির্বাচন কমিশন (ইসি) যেন সাজানো নির্বাচনের পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের। তিনি বলেন, সংলাপে প্রায় সব রাজনৈতিক দল ইভিএমের বিরোধিতা করেছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন ইভিএমে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন তিনি।
জি এম কাদের বলেন, দেশের বেশির ভাগ মানুষ মনে করে, ইভিএম হচ্ছে কারচুপির মেশিন। আবার নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি বলছে, সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব নয়। তাই নির্বাচন কমিশন অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে পারবে কিনা তা নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ আছে।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, মনে হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে মাতামাতি করছে। অপরদিকে, দেশের মানুষ কথা বলতে পারছে না। কোনো দাবিতে আন্দোলন হলে পুলিশ ও প্রতিপক্ষরা তাতে হামলা চালাচ্ছে। এমন বাস্তবতায় নির্বাচন হলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে না। যেখানে সরকারের ৯০ ভাগ প্রভাব রয়েছে, পুলিশ ও প্রশাসন সরকারের হাতে, এমন বাস্তবতায় সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না।
জাতীয় পার্টিতে কোনো সংকট নেই উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, কোনো ভাঙনের মুখে পড়বে না জাতীয় পার্টি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রতিপক্ষ হিসেবে জাতীয় পার্টিকে বারবার ক্ষতি করতে চেয়েছে। যারা পার্টি ছেড়ে গেছে তারা কেউ শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি। এভাবে কেউ চলে গেলেও জাতীয় পার্টি দুর্বল হবে না।
জি এম কাদের আরও বলেন, রওশন এরশাদ আমাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন। আমার অসুস্থতা বা দুর্ঘটনার সংবাদে তিনি বারবার ফোন করে খবর নিয়েছেন। তিনি বারবার বলেছেন, আমি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হতে চাই না। তিনি বারবার সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, জাতীয় পার্টি এখন ভালোভাবে চলছে।
প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আমাদের তিনি পরামর্শ দিতে পারেন উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা বা না করা জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের এখতিয়ার।
রওশন এরশাদ অসুস্থতার কারণে প্রায় এক বছর বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে অবদান রাখতে পারছেন না দাবি করে জি এম কাদের বলেন, তাই সংসদীয় দল জাতীয় পার্টির ঐক্য রক্ষা ও পার্টিকে ষড়যন্ত্রের হাত থেকে বাঁচাতে রওশন এরশাদকে বিরোধীদলীয় নেতা না রাখার পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গেল এক বছরে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল অসুস্থ বিরোধীদলীয় নেতার কর্মকাণ্ড নিয়ে ভাবেনি। এখন জাতীয় পার্টির স্বার্থেই বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পার্টির সংসদীয় দল তাদের সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে জাতীয় সংসদের স্পিকারকে জানিয়েছেন। এখন বিধি অনুযায়ী স্পিকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।