বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেছেন, ‘সরকারের মন্ত্রীরা মিথ্যা কথা বলে, তারা মিথ্যা বলার জন্য দক্ষ। দেশের উন্নয়নে কাজ করার জন্য দক্ষ নয়। সরকারের কিছু লোভী ব্যক্তি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের নামে দেশের পরিবেশ ধ্বংস করে দিয়েছে। ১৪ বছর ধরে অদক্ষতা ও দুর্নীতি করে দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশ শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থা হতে আর বেশি দিন বাকি নেই। সেরকম যদি হয়ে যায় তাহলে এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ১৫-২৫ বছর সময় লাগবে।’
শনিবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আরাফাত রহমান কোকোর ৫৫তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সরকার পরিকল্পিতভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। ব্যাংকগুলো খালি করে দিচ্ছে। কিছুদিন আগেও আওয়ামী লীগের নেতারা দেশকে সিঙ্গাপুর বলত আর এখন দেশের রিজার্ভ তলানিতে। অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন আমরা আইএমএফ’র কাছে ঋণ চাইনি, কিন্তু দুই দিন পর জানা গেল সরকার আইএমএফের করে ঋণ চেয়েছে। তাই আমরা সরকারকে বলতে চাই, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগ করুন, তা না হলে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে হটানো হবে।’
মঈন খান আরও বলেন, ‘আরাফাত রহমান কোকো এমন সময়ে মারা যান যখন তার মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে গুলশানের কার্যালয়ে ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে অবরুদ্ধ ছিলেন। সরকার তার বাসার সামনে বালুর ট্রাক ও বাসার গেটে তালা লাগিয়ে রাখে। ছেলের মৃত্যুর সংবাদে অচেতন হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। বারবার মূর্ছা যান তিনি। বিদেশে ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসার জন্য অবস্থান করলেও আদরের ছোট ছেলে এভাবে মারা যাবেন এমনটি খালেদা জিয়ার কল্পনায়ও ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে পাশে থাকা পরিবারের স্বজনরা সান্ত্বনা দিতে গেলেও তাকে থামানো যায়নি। ছেলের মৃত্যুতেও তিনি জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষায় আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমাদের নেত্রী আজীবন বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন। এখনও তিনি দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা মানে পুরো বাংলাদেশের মানুষকে কারাগারে রাখা হয়েছে। বর্তমান সরকারকে দেশের এই অবস্থা জন্য জবাব দিতে হবে। আমাদের এক মন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ মানুষ নাকি বেহেশতে আছে। তারা আরও বলেন, আমেরিকার চেয়ে বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে। এ অবস্থা হলে বিদ্যুতের লোডশেডিং কেন? নজিরবিহীন ভাবে এক লাফে তেলের দাম বাড়ানো হলো কেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার চাপাবাজি করে বলে দেশ খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ। সরকার বুঝতে পারছে তারা বিদায় নিলে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। এ সরকারকে আর সুযোগ দেওয়া যাবে না। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে। আমাদের লক্ষ্য এক— এই ফ্যাসিবাদ সরকারকে সরিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আলমগীর হোসেন। বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম রাহি, ঢাকা বিভাগ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, ভিপি হারুনুর রশিদ, অ্যাডভোকেট রফিক শিকদার, হায়দার আলী লেলিন, রফিকুল আলম মজনুসহ অন্য নেতারা।