যারা করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তাদের জন্য দ্বিতীয় ডোজ টিকা সুরক্ষিত আছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির চেয়ার অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। সোমবার ( ২৯ মার্চ) অনলাইনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি কথা জানান।
এর আগে সোমবার সকালে যথাসময়ে না পেলে টিকার জন্য অন্য পরিকল্পনা করতে হবে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আগামী ৮ এপ্রিল থেকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগের কার্যক্রম শুরু হবে বলে এর আগেই জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর।
এখনও পর্যন্ত দেশে এককোটি দুই লাখ টিকা এসেছে, পরের চালান কবে আসবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হলে টিকাদান কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে কিনা প্রশ্নে অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘আমাদের কাছে দ্বিতীয় ডোজের টিকা সুরক্ষিত রেখেছি, যাদের প্রথম ডোজ দিয়েছি তাদের জন্য।’
তিনি বলেন, ‘তবে একথা সত্যি যে, সবার জন্য দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেই। কিন্তু আমরা যখন কাজ শুরু করবো, টিকা যাতে এসে যায়, সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা আশাবাদী, দ্বিতীয় ডোজের টিকা পাবো। আমাদের হাতে এখনও পর্যন্ত ৪২ লাখ টিকা মজুত রয়েছে।’ অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, ‘আশা করছি, আগামী মাসে কিছু টিকা পেয়ে যাবো। তার ভিত্তিতে দ্বিতীয় ডোজের টিকা সবাইকে যাতে দিতে পারি, সেটা নিশ্চিত করার জন্য আমরা কাজ করছি।’ যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে সেই প্রজ্ঞাপন সঠিকভাবে সবাইকে মেনে চলার জন্যও অনুরোধ করেন তিনি।
এবার যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের বেশিরভাগ বয়সে তরুণ বলে এর আগে জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক। এটা কেন হচ্ছে জানতে চাইলে মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘এটা এবারে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু করোনা কোনও বয়স অথবা কোনও জেন্ডার মেনে সংক্রমিত করে না— এটা মনে রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে মানুষ বাইরে কম বের হতেন। তখন আমরা দেখেছি যারা বাইরে যাচ্ছেন, কাজে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি।’ ‘এখন সবাই বাইরে বের হচ্ছেন। বিশেষ করে তরুণরা এখন অনেক বেশি বাইরে বের হন।এ কারণে তাদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি দেখা যাচ্ছে। যারা সংক্রমণের সংস্পর্শে যাবেন, বাইরে ঘোরাফেরা করবেন, তাদের মধ্যে সংক্রমণটা হবে. বলেন অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকা হচ্ছে ‘অন্যতম হাতিয়ার’ বলে মন্তব্য করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ও মুখপাত্র অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘যারা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তারা দুই মাস পর পরবর্তী ডোজ টিকা নেবেন। যাদের এসএমএস যায়নি, যথাসময়ে তাদের এসএমএস চলে যাবে।’ ৪০ বছরের ওপরে এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাদেরকে অ্যালাউ করা হয়েছে টিকা দেবার জন্য, তাদেরকে যতদ্রুত সম্ভব নিবন্ধন করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কাছের টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেবেন।’
অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘তবে প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার পর ইমিউনিটি (শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা) সেভাবে তৈরি হয় না। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ১৪ দিন পর থেকে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হতে শুরু করে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বলেনি যে, সেটিও শতভাগ সুরক্ষা দেয়।’ তাই টিকা গ্রহণ করার পরও স্বাস্থ্যবিধির প্রতি অনুগত থাকতে হবে, বলেন তিনি।