দ্বাদশ সংসদ নিবাচনকে সামনে রেখে ইভিএম পরীক্ষা-নিরাক্ষা ও পরামশ দিতে নিবন্ধিত ৩৯ দলকে আমন্ত্র্রণ জানাবে নিবাচন কমিশন। এর মধ্যে ১৩টি দলের সাথে ১৯ জুন কথা বলেছে নিবাচন কমিশন।
ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার সাংবাদিকদের বলেন, “৩৯টি নিবন্ধিত দলকে বুধবার চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি আমরা। আইটি বিশেষজ্ঞসহ সর্বোচ্চ ৪ জন আসার জন্যে প্রতিটি দলকে অনুরোধ করা হয়েছে।
“১৯ জুন ১৩টি দল তাদের মত প্রকাশ করেছে। বাকি ২৬টি দলকে ২১ জুন ও ২৬ জুন- ২ দিনে ইভিএমের কারিগরি দিক তুলে ধরা ও মত বিনিময়ের জন্য ডাকা হয়েছে।”
অংশীজনের সঙ্গে ইসির চলমান সংলাপে ইভিএম নিয়ে পক্ষে যেমন মত এসেছে, তেমনই বিপক্ষেও মত আছে। বিশেষজ্ঞদের মতামতও নিয়েছে ইসি। এরপরই দলগুলোকে ডাকল তারা।
কমিশন চিঠিতে বলেছে, বিভিন্ন নির্বাচনে ইভিএমে ভোট নিচ্ছে কমিশন। ইভিএমে কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি আছে কি না এবং এ মেশিন আরও উন্নত করা যায় কি না, সে বিষয়ে মত বিনিময় করবে কমিশন।
এ সময় নির্বাচন কমিশনের বিশেষজ্ঞ ও প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিএমটিএফ-এর কারিগরি বিশেষজ্ঞরা ইভিএমের কারিগরি ও ভোটগ্রহণের যাবতীয় বিষয় তুলে ধরবেন। এসময় দলের প্রতিনিধিরা ইভিএম বিষয়ে তাদের মতামত ও পরামর্শ দিতে পারবেন।
১৯ জুন যেসব দল আমন্ত্রিত হয়েছিল
জাতীয় পার্টি জাতীয় পার্টি-জেপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম ও বাংলাদেশ কংগ্রেস।
বাংলাদেশ কংগ্রেসের চেয়ারম্যান কাজী রেজাউল হোসেন বলেন, “আমাদের ১৯ জুন বিকালে মত বিনিময় সভার জন্যে ডেকেছে, চিঠিও পেয়েছি। আমরা ইভিএম নিয়ে মতামত দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে যাব।”
২১ জুনের আমন্ত্রিত দল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট-এর মহাসচিব এম এ মতিন বলেন, “আমরা কমিশনে যাব ২১ জুন বিকালে। মত বিনিময় সভায় ইভিএম দেখে পরামর্শ দেবো। পাঁচ জনের প্রতিনিধি দল যাওয়ার জন্যে চেষ্টা করব।”
২৬ জুন যেসব দল আমন্ত্রিত
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল-বিএমএল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট।
জাসদের দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “দলের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মত বিনিময় সভায় যাবো। আমরা কারিগরি টিমও প্রস্তুত রাখছি।”
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের এক সভায় দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইঙ্গিত দেন, আগামী নির্বাচনে ইভিএমে ভোট হোক- সেটাই তিনি চান।
অন্যদিকে বিএনপি আগে থেকেই ইভিএমের বিরোধিতা করে আসছে। নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে আওয়ামী লীগের সভায় ওই আলোচনা কতটা ‘প্রাসঙ্গিক’ হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলেছে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও।