বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈর (মনি) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাকে চাকরিচ্যুত করা হতে পারে। মঙ্গলবার এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করবে মন্ত্রণালয়। মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের এপিএস ছিলেন। সরকারের অনুমতি ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন তিনি।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ফজলুর রহমান সোমবার (১৩ জুন) রাতে জাগো নিউজকে বলেন, মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈর বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাকে বারবার চিঠি দেওয়ার পরও তিনি কোনো জবাব দেননি। সে জন্য আইনগতভাবে তার বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে ব্যবস্থা। মঙ্গলবার সকালে এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ ২০১৮ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর দেশ ছাড়েন তিনি। ২০০৯ সালে নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর টানা আট বছর তার এপিএস ছিলেন মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ। ওই সময় শিক্ষাখাতের বদলি ও পদায়নসহ সবকিছুই তার নিয়ন্ত্রণে ছিল। নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে সে পদ থেকে নুরুল ইসলাম নাহিদই তাকে সরিয়ে দেন।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরিদর্শক (কলেজ) থেকে সরিয়ে খুলনার বিএল কলেজে বদলি করা হয়। কিন্তু তিনি কলেজে যোগদান করেননি। তার বেশ আগেই বিদেশে চলে যান। কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই কর্মস্থলে দীর্ঘকাল অনুপস্থিত থাকায় ওই বছরের ১২ এপ্রিলের মধ্যে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়। এরপরও তিনি কর্মস্থলে ছিলেন অনুপস্থিত। তিনি চলে গেলেও তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা ঢাকা শিক্ষা বোর্ড, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন।
সবশেষ চলতি বছরের (২০২২ সাল) জানুয়ারিতে তার কাছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, কর্মস্থলে যোগদানের জন্য বলা হলেও আপনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পদায়ন-বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান না করে অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। প্রজাতন্ত্রের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে এ ধরনের কার্যকলাপ সরকারি চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণবিধি পরিপন্থী এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ৩(খ) ও ৩(গ) অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
চিঠিতে শিক্ষা ক্যাডারের এই কর্মকর্তাকে ১০ দিনের মধ্যে কর্মস্থলে যোগদান না করার কারণ লিখিতভাবে জানাতে এবং তিনি ব্যক্তিগত শুনানি চান কি না তাও জানাতে বলা হয়েছিল। এর মধ্যে তিনি প্রশাসনিক এসব প্রক্রিয়ায় যুক্ত না হওয়ায় তাকে চাকরিচ্যুতির নোটিশ দেওয়া হয়। সেটিতেও তিনি কোনো সাড়া না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।