পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই এই বিক্ষোভের তারিখ ঘোষণা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (৮ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইমরান খান বলেছেন, ‘সত্যিকারের স্বাধীনতার জন্য পরবর্তী ধাপে আমাদেরকে সর্বাত্মকভাবে এগিয়ে যেতে হবে। আমি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে (বিক্ষোভের) একটি তারিখ ঘোষণা করবো।’
রাজধানী ইসলামাবাদে পিটিআইয়ের জাতীয় কাউন্সিলের সভায় ভাষণ দেওয়ার সময় ইমরান খান বলেন, তার দল তার আইনজীবীদের সাথে পরামর্শ করছে। তবে আন্দোলনের জন্য দলীয় কর্মীদের প্রস্তুত থাকতে হবে। তার ভাষায়, ‘এটি হবে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। এটি (বিক্ষোভ করা) আমাদের অধিকার।’
পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দলের সব সংগঠনকে প্রস্তুত থাকতে বলেছি। আমরা সুপ্রিম কোর্টের কাছ ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। সেটি হয়ে গেলেই তারিখ ঘোষণা করা হবে।’
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে পরাজিত হয়ে মাস দু’য়েক আগে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন ইমরান খান। মূলত নিজ দলের প্রায় দুই ডজন সংসদ সদস্যের দলত্যাগের পর ইমরান সরকারের পতন ত্বরান্বিত হয়।
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানজুড়ে বড় বড় শহরগুলোতে একের পর এক সমাবেশ করেছেন সাবেক এই তারকা ক্রিকেটার। এসব সমাবেশে পিটিআই নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।
ধারাবাহিক এসব সমাবেশে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া ও জাতীয় নির্বাচনের দাবি তোলার পাশাপাশি তার ডাক এলে রাজধানী ইসলামাবাদে সবাইকে হাজির হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন ইমরান। পরে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে গত মে মাসের শেষের দিকে লংমার্চ করেন তিনি। দেশটির বর্তমান শেহবাজ সরকারের নানা বাঁধা বিপত্তি সত্ত্বেও ইমরানের ডাকে নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।
এসব সমাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পিটিআই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পেছনে বরাবরই বিদেশি ষড়যন্ত্রকে দায়ী করেছেন ইমরান। একইসঙ্গে শেহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানের বর্তমান সরকারকে ‘আমদানীকৃত সরকার’ বলেও অভিযুক্ত করে আসছেন তিনি।
এছাড়া সাম্প্রতিক একটি সমাবেশে পিটিআইয়ের এই প্রধান বলেন, রাষ্ট্র সঠিক সিদ্ধান্ত না নিলে পাকিস্তান ‘তিনটি ভাগে বিভক্ত হতে পারে’।