রায়পুরে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে শাহনারা বেগম নামে এক বিধবাসহ তার পরিবারের ওপর ৩৫ বার হামলার অভিযোগ উঠেছে। মিরাজ হোসেন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় চট্টগ্রাম বিভাগের ডিআইজি, এসপি ও রায়পুর থানায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার। থানায় করা হয়েছে ২৫টি জিডি ও আদালতে কয়েকটি মামলাও রয়েছে। এরপরও প্রশাসনের ধরা ছোঁয়ার বাইরে অভিযুক্তরা।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) দুপুরে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে রায়পুর পৌর শহরের একটি চাইনিজ রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শাহনারা এসব তথ্য জানিয়েছেন। এসময় তার ছেলে মুফতি হাবিবুল্লাহ সোহাইল উপস্থিত ছিলেন।
এসময় কান্না কণ্ঠে শাহনারা বেগম বলেন, মিরাজের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। তার বাবা আবদুর রব আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর মরদেহ সময়মতো দাফন করতে দেয়নি। বিভিন্ন সময় তারা আমার হামলা করেছে। আমার গলাই চেনি ধরেছে। প্রাণ রক্ষায় আমি পালিয়ে গেলে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে। পূত্রবধূসহ আমি ঘরে একা থাকি। ঘর থেকে বের হলেই আমাদের সঙ্গে তারা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটায়। এসব ঘটনা থেকে রেহাই পেতে আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা চাচ্ছি।
লিখিত বক্তব্যে শাহনারার ছেলে মুফতি হাবিবুল্লাহ সোহাইল বলেন, মিরাজ ও তার পরিবার বিভিন্ন সময় আমার মায়ের ওপর ৩৫ বার হামলা করেছে। এসব ঘটনায় মিরাজদের বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে প্রায় ২০টি মামলা রয়েছে। আমার মায়ের ওপর হামলার ঘটনায় বিভিন্ন সময় থানায় ২৫টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছি। তদন্তে সত্যতা মিললেও কোনো শাস্তি না হওয়ায় তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে কোনো সময় তারা আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি করতে পারে। এ ঘটনায় আমরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ ব্যাপারে মিরাজ হোসেনের দাবি, জমি নিয়ে তাদের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমা চলছে। তার কোনো বাহিনী নেই। হয়রানি করার জন্য এসব প্রচার করা হচ্ছে। বক্তব্য জানতে রায়পুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়ার মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
শাহনারার কাগজপত্র পর্যালোচনা করে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর জেলা পুলিশ সুপার একটি ও রায়পুর থানায় করা ৮টি জিডির কপি পাওয়া গেছে। জিডিগুলো ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এসব অভিযোগ করা হয়। ২০১৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগের ডিআইজির কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন শাহনারা। ২০১৬ সালে ৩১ আগস্ট লক্ষ্মীপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রায়পুর আদালতে ৬টি মামলার কাগজপত্র বাদী শাহনারা বেগমের কাছে পাওয়া যায়।