জাতিসংঘ স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আফ্রিকার বাইরে বিশ্বের ১৫টি দেশে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। খবর বিবিসির। রোববার (২৩ মে) অস্ট্রিয়া ও সুইজারল্যান্ডে নতুন করে আরও কয়েকজন এ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে, গত শুক্রবার (২০ মে) বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বেলজিয়াম মাঙ্কিপক্স ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তিদের জন্য তিন সপ্তাহের কোয়ারেন্টাইন ঘোষণা করেছে। এরই মধ্যে ইউরোপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও ইসরায়েলে ৮০ জনেরও বেশি লোকের মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ভাইরাসে জনসাধারণের ব্যাপকভাবে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি কম।
যুক্তরাজ্যে প্রথমবারের মতো মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হওয়ার পর ভাইরাসটি ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। যুক্তরাজ্যের পর স্পেন, পর্তুগাল, জার্মানি, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি ও সুইডেনের পাবলিক হেলথ এজেন্সিগুলোও সেসব দেশে মাঙ্কিপক্স রোগী শনাক্তের ঘোষণা দেয়।
এর আগে, ডব্লিউএইচও সতর্ক করে বলেছিল, কয়েকটি দেশে সন্দেহভাজন মাঙ্কিপক্স রোগীদের নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে এবং এটি অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে সে সময় দেশগুলোর নাম উল্লেখ করেনি সংস্থাটি।
মাঙ্কিপক্স ভাইরাস মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। মানুষের মধ্যে খুব সহজে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে না। আবার, কেউ সংক্রমিত হলেও সাধারণত হালকা অসুস্থতা বোধ করেন তারা। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মতে, এ ভাইরাসে আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন।
মাঙ্কিপক্সের কোনো নির্দিষ্ট ভ্যাকসিন নেই। তবে বেশ কয়েকটি দেশ বলছে, এ ভাইরাস ঠেকাতে তারা গুটিবসন্তের ভ্যাকসিন মজুদ করছে, যা সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রায় ৮৫ শতাংশ কার্যকর। কারণ ভাইরাস দুটির মধ্যে বেশ কিছু মিল রয়েছে।
বিশ্বে মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিজ্ঞানীদের অবাক করে দিয়েছে। তারা মাঙ্কিপক্সের এই প্রাদুর্ভাবকে অপ্রত্যাশিত আখ্যা দিয়ে বলছেন, হঠাৎ করে এর আবির্ভাবের কারণ তাদের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়। তাদের মতে, ভাইরাসটি হয়তো কোনোভাবে পরিবর্তিত হয়ে নতুন রূপ নিয়েছে, যদিও বর্তমানে এর পক্ষে সুস্পষ্ট কোনো প্রমাণ নেই।
আবার কেউ কেউ বলছেন, উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে ভাইরাসটি বিকশিত হয়ে থাকতে পারে।