১৯৭২-৭৩ অর্থবছর থেকে শুরু করে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত বাংলাদেশে কালো টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৮ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। একই সময়ে বিদেশে অর্থপাচারের পরিমাণ ৮ লাখ কোটি টাকা।
রোববার (২২ মে) অর্থনীতি সমিতির অডিটোরিয়ামে ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা ২০২২-২৩ : একটি জনগণতান্ত্রিক বাজেট প্রস্তাব’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত এ তথ্য জানান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম।
দেশের আয় বৃদ্ধি ও বাজেট ঘাটতি পূরণের বিষয়ে অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণে অন্যতম উৎস হলো সম্পদ কর ও অতিরিক্ত মুনাফার ওপর কর। এছাড়া কালো টাকা উদ্ধার থেকে প্রাপ্ত অর্থ এবং পাচার ও বিদেশি নাগরিক থেকে প্রাপ্ত কর। তাই আমরা ওই টাকা সংগ্রহের কথা বলছি।
কালো টাকা ও অর্থপাচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৯৭২-৭৩ অর্থবছর থেকে শুরু করে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত আমাদের হিসাবে বাংলাদেশে কালো টাকার পরিমাণ ৮৮ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। আমরা গত ৪৬ বছরে পুঞ্জীভূত কালো টাকার মাত্র দুই শতাংশ উদ্ধারের প্রস্তাব করছি। যেখান থেকে এক লাখ ৭৭ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা আসবে। ওই ৪৬ বছরে বিদেশে অর্থপাচারের পরিমাণ ৮ লাখ কোটি টাকা। আমরা তার ১০ শতাংশ উদ্ধার করে বাজেটে আয় খাতে ব্যবহার করার জন্য প্রস্তাব করেছি। যার পরিমাণ ৭৯ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা। দুর্নীতি, অর্থপাচার ও কালো টাকা উদ্ধারে আমরা একটি স্বাধীন কমিশন গঠনেরও প্রস্তাব করছি।
সংবাদ সম্মেলনে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ২০ লাখ ৫০ হাজার ৩৬ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট পেশ করে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। বাজেটে মোট ৩৩৮টি সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। এতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১৮ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। যেখানে প্রত্যক্ষ করের ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি কালো টাকা উদ্ধার ও পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে বাজেট ঘাটতি পূরণের কথা বলা হয়েছে। বিকল্প বাজেটে বৈদেশিক ঋণ ও ব্যাংক ঋণকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
অনুষ্ঠান থেকে মেগা প্রকল্পে ঋণের ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে বারকাত বলেন, দেশের মেগা প্রকল্পের বৈদেশিক ঋণ যখন শোধ করা শুরু হবে, তখন আমরা সরাসরি রেড ঝুঁকিতে চলে যাব। সংকট সমাধানে আর কোনো মেগা প্রজেক্ট নেওয়া যাবে না, কোনো প্রজেক্টের মেয়াদ বাড়ানো যাবে না।