পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি আজিজার রহমানের ছেলেকে মারধরের অভিযোগে ওই আদালতের অস্থায়ী কর্মী মজনু মিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বুধবার (১১ মে) বিকেলে মজনুর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। জানা গেছে, পিপি আজিজার রহমানের ছেলে সোহরাওয়ার্দী রহমান মশালকে মারধরের অভিযোগে মঙ্গলবার (১০ মে) মজনু মিয়াকে পুলিশের হাতে তুলে দেন পিপি নিজেই। এরপর থানায় এজাহার দেন তিনি। বুধবার (১১ মে) বিকেলে মজনুকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে। তবে আদালতে মজনু মিয়ার ভাই মোশারফ হোসেনের অভিযোগপত্র থেকে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
থানায় দেয়া ওই অভিযোগপত্রে বলা হয়, মজনু মিয়া ওই আদালতে আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। এমনকি পিপি আজিজার রহমানের সহকারী হিসেবেও কিছুদিন কাজ করেছেন। সম্প্রতি পঞ্চগড় আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক নিয়োগ করা হয়। পিপি আজিজার রহমান মজনুকে ওই আদালতে পিয়ন পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য ১ লাখ টাকা দাবি করেন। প্রস্তাবে রাজি হয়ে মজনু গত ১০ মার্চ পিপির বাড়িতে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা দেন। বাকি টাকা ৫ মে দেয়ার কথা ছিল। এ দিকে নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করতে থাকেন মজনু। নির্ধারিত সময়ে বাকি টাকা পরিশোধ না করায় মঙ্গলবার (১০ মে) সকালে ওই আদালতের স্টেনোর কক্ষ থেকে মজনুকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করেন পিপির ছেলে মশাল। মজনু বের না হওয়ায় তাকে মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়।
মজনুর ছোট ভাই মোশারফ হোসেন বলেন, মশাল আইনজীবীও না আইনজীবীর সহকারীও না। সে তার বাবার পরিচয়ে আদালতে লুটপাট করে খায়। তার কথা না শুনলেই মারধর করে। আমরা তাদের চাহিদা মতো টাকা দিতে পারিনি বলে আমার ভাইয়ের ওপর আজ এই নির্যাতন। তারাই মারধর করেছে আবার তারাই পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। সবকিছু যেন তাদের দখলে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। প্রশাসন ও আদালতের কাছে আমরা ন্যায় বিচার চাই।
পিপি আজিজার রহমান বলেন, মজনু স্টেনোর কক্ষে আমার ছেলেকে মারধর করেছে এবং শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে। তাকে কোন মারধর করা হয়নি। আমি বিষয়টি পুলিশকে জানাই এবং তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করি। চাকরি দেয়ার কথা বলে টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, এ ধরণের কথা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমি তার বিরুদ্ধে এজাহার করেছি। পুলিশ সেটা তদন্ত করছে। পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, দুই পক্ষ থেকে দুটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এছাড়া আটক মজনুকে ১৫১ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়।