চরম অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যে শ্রীলঙ্কায় নারকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সরকার সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৮ জন নিহত ও কমপক্ষে ২০০ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কাউকে সরকারি সম্পদ নষ্ট বা প্রাণঘাতী কিছু করতে দেখা গেলেই গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে এ নির্দেশনা দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নলিন হেরাথ বলেছেন, কাউকে সরকারি সম্পত্তি লুটপাট বা মানবজীবনের ক্ষতি করতে দেখলে নিরাপত্তা বাহিনীকে গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট এক টুইট বার্তায় দেশটির বিক্ষুব্ধ নাগরিকদের সরকারি সম্পদের ক্ষতি সাধন না করার অনুরোধ করার পাশাপাশি নাগরিকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশটিতে সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকট সমাধানে সংবিধানের আলোকে কাজ করা হবে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক দুরবস্থা নিরসনে কাজ করা হবে।
এদিকে সরকার বিরোধী সহিংসতার মধ্যে পড়ে দেশটির একজন সংসদ সদস্যসহ ৮ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এছাড়াও মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রীসহ অর্ধশতাধিক নেতার বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। শ্রীলঙ্কার পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার বিক্ষোভকারীরা কলম্বো উপকণ্ঠে সরকার দলীয় এমপি অমরাকীর্তি আথুকোরালার গাড়িতে হামলা চালালে তিনি দুজনকে গুলি করেন। এতে একজন মারা যান। এরপর সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা তাকে ঘিরে ধরেন। পরে নিজের পিস্তল দিয়ে আত্মহত্যা করেন অমরাকীর্তি।
ওই রাতে হোমগমার মহাকুম্বুরা এলাকায় সংসদ সদস্য কুমারা ওয়েল্গামার গাড়িতে হামলা চালিয়েছে একদল বিক্ষোভকারী। এতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ওই এমপি। হামলার শিকার হয়েছেন লঙ্কান পুলিশের সিনিয়র ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (এসডিআইজি) দেশবন্ধু টেন্নাকুন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নতুন এই নির্দেশনার আলোকে দেশটিতে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা কোনো বিক্ষোভকারীকে আটকের পর পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার আগে ২৪ ঘণ্টা নিজেদের হেফাজতে রাখতে পারবেন। একই সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা যেকোনো বেসরকারি স্থাপনা ও গাড়িতে তল্লাশি চালাতে পারবেন। এছাড়াও কোনো পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতারের ক্ষমতা পেয়েছে পুলিশ। তারপরও সরকার বিরোধীদের দমন করা যাচ্ছে না।