বাজারে তেলের সংকট নিয়ে ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের দুষলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ভোজ্যতেলের দাম না বাড়ানো এবং সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে অনুরোধের পরও ব্যবসায়ীরা কথা রাখেননি বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস করেছিলাম। এটাই আমাদের ব্যর্থতা। বিশ্বাস করা ভুল হয়েছে, কিন্তু ছোটবেলা থেকেই আমরা শিখেছি মানুষকে বিশ্বাস করতে হয়।’
সোমবার (৯ মে) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
তেলের সংকট তৈরি করা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, খুচরা পর্যায়ে কাজটি করেছে। আমাদের ভোক্তা অধিকার যেখানেই এ ধরনের ঘটনা পাচ্ছে, তাদের জরিমানা-মামলা করছে। আমরা অ্যাসোসিয়েশনকে বলেছি, তাদেরও ব্যবস্থা নিতে হবে। মিল মালিকদেরও করতে হবে মনিটরিং। কোন কোন জায়গায় এ ধরনের ডিলার আছে, তাদের ডিলারশিপ বাতিল করতে হবে। আইনগতভাবে যেখানে যেটা দরকার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আগামীতে তেলের দাম বাড়বে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক বাজার মনিটর করব। আশপাশের দেশগুলো দেখে বিবেচনা করব সবকিছু। যত দূর দাম কমানো যায় সেই চেষ্টা করব।
টিপু মুনশি বলেন, বিশ্ববাজারের ভোজ্যতেলের মূল্য পরিস্থিতি প্রচার মাধ্যমে তুলে ধরা প্রয়োজন। ভোজ্যতেল একটি আমদানি নির্ভর পণ্য। দেশের মোট চাহিদার মাত্র ১০ ভাগ স্থানীয় উৎপাদন থেকে মেটানো হয়, অবশিষ্ট ৯০ ভাগই আমদানি করতে হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্য ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আমাদের দেশেও এর প্রভাব পড়েছে। আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি, যাতে ভোজ্যতেলের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে থাকে এবং বাজারে যাতে তেলের কোন ঘাটতি না হয়, সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতেও তেলের দাম আমাদের তুলনায় বেশি বেড়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখন প্রতি লিটার বোতলজাত ভোজ্য তেলের মূল্য ১৯৮ টাকা, একই সময়ে ভারতে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২২৪.৬৫ টাকা, পাকিস্তানে প্রায় ২৩৮.৬৯ টাকা এবং নেপালে প্রায় ২১৪.৭৫ টাকা। আমরা কঠোরভাবে মনিটরিং করছি যাতে তেলের ক্রয় মূল্য, পরিবহন ব্যয়, শুল্কসহ সবধরনের ব্যয় ধরে যৌক্তিক পর্যায়ে মূল্য নিশ্চিত করা যায়। ভোজ্যতেলের সরবরাহ নিশ্চিত করতে মিলগেট থেকে শুরু করে পাইকারি এবং খুচরা পর্যায়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে।