বাইশ-গজের লড়াই ছড়িয়ে দিতে আর ভালো মানের ক্রিকেটার বের করে আনতে প্রয়োজন উন্নত অবকাঠামো। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য ক্রিকেট মাঠ। যার জন্য ফাঁকা জায়গা কিনে মাঠ তৈরির পরিকল্পনা আগেই ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের। এবার ভাবনা আরো বিস্তৃত, গোটা দেশে অন্তত ২০টি আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম করার পরিকল্পনা ক্রিকেট বোর্ডের।
মিরপুরে সংবাদমাধ্যমকে বিসিবির গ্রাইন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুব আনাম বলেন, ‘আমাদের যে পরিমাণ খেলা তাতে ২০টি আন্তর্জাতিক মানের মাঠ তৈরি না করলে কোনভাবেই (উন্নয়ন) সম্ভব না।’
বাংলাদেশে তো আন্তর্জাতিক মাঠ নেহায়েত কম নেই। মিরপুর, ফতুল্লা, খুলনা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, বগুড়া, কক্সবাজার মিলিয়ে সংখ্যাটা প্রায় ১০ এর অধিক। সবখানে তো আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন হয় না, তবে কেন এমন ভাবনা বোর্ডের? মাহাবুব আনাম জানিয়েছেন, এর অধিকাংশ প্রয়োজন ঘরোয়া ক্রিকেট উন্নয়নের জন্য। তার মতে, বছরে ৪ মাস বৃষ্টির কারণে বন্ধ থাকে খেলা। আর বাকি ৮ মাস স্কুল ক্রিকেট, বয়সভিত্তিক দল, নারী দল, ঘরোয়া ক্রিকেট মিলিয়ে ম্যাচ হয় প্রায় সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি।
এই চাপ সামাল দিতে এখন যেগুলো আছে সেই মাঠ আর উইকেটের মান ভালো থাকছে না। এজন্য গোটা দেশে ২০টি এবং ঢাকায় ৬ থেকে ৮টি মাঠ তৈরির ভাবনা বিসিবির।
মাহাবুব বললেন, ‘আমাদের ইচ্ছে ঢাকায় যাতে ছয়টি উন্নত মানের ভেন্যু থাকে। তাতে ঢাকায় যে পরিমাণ খেলাগুলো হয়- প্রিমিয়ার লিগ বা অন্যান্য খেলা, সেগুলো যাতে সুন্দরভাবে করা যায়। এখন আমরা ফতুল্লাকে নিয়ে স্ট্রাগল করছি। ফতুল্লার কাজ শুরু হলে ওখানে আমরা দুইটা মাঠ পেয়ে যাব। পূর্বাচলে আমরা দুইটি মাঠ করব। এর বাইরে মিরপুর তো রয়েছেই। বিকেএসপি আছে। তার বাইরেও দুটো মাঠ করার মতো ঢাকার আশেপাশে জায়গা কেনা হবে।’
বোর্ডের গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান অবশ্য জাতীয় দলের ক্রিকেটাদের জন্য দিয়েছেন মন খারাপ করা খবর। এখন থেকে অনুশীলনে মিরপুরের সেন্টার উইকেট ব্যবহারের অনুমতি পাবেন না সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালরা। তবে মূল উইকেটের পাশে তাদের অনুশীলনের জন্য আরো ৪টি উইকেট করে দেবে বোর্ড। সঙ্গে মিরপুরের একাডেমি মাঠ আর চট্টগ্রামের আউটারে রাতে অনুশীলনের সুবিধা দিতে বসানো হবে ফ্লাডলাইট।
মাহাবুবের ব্যাখ্যা, ‘মিরপুরে অনুশীলনের জন্য সেন্টারে আমরা আরো চারটি উইকেট তৈরি করতে যাচ্ছি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে আমরা কাজে হাত দিব। কারণ আপনারা জানেন এখানে বিভিন্ন সময় জাতীয় দল বা অন্যান্য দল অনুশীলন করে থাকে। কাজেই সেন্টারে আমাদের যে আটটি উইকেট আছে, সেগুলো ইফেক্টেড হয়। সে ক্ষেত্রে লোকাল খেলাগুলোর জন্য আমরা ভালো উইকেট দিতে পারি না। পরিকল্পনা অনুযায়ী সেন্টারে আমরা দুই দিকে আট-আট করে ১৬ ফিটের আরো চারটি উইকেট করব যেগুলো অনুশীলনের জন্য ব্যবহার করা হবে।’
ঢাকার বাইরের স্টেডিয়ামগুলোর উন্নয়ন প্রসঙ্গে মাহাবুব বলেন, ‘গতবছর আমরা সিলেটের পর চট্টগ্রামের কাজ ধরেছি। এবার আমরা রাজশাহীতে কাজ ধরবো, বগুড়াতে কিছু কাজ ধরেছি। সেটা বাইরের অনুশীলন উইকেট। আমরা প্রত্যেকটা স্টেডিয়ামের একটা মাস্টারপ্ল্যান করতে যাচ্ছি, যেটা রিজিয়নে আমাদের ভালো একটা সুযোগসুবিধা থাকবে। যেটাতে খেলার বাইরে অনুশীলন এবং একাডেমি থাকবে। এ বছরে আমাদের পরিকল্পনা মিরপুরের অ্যাডিশনাল উইকেট এবং রাজশাহী, বগুড়া- এই তিনটা ভেন্যুকে আমরা সম্পূর্ণরূপে আপগ্রেড করব।’