পরিবারের সঙ্গে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপন শেষে কর্মীরা বাড়ি থেকে কর্মস্থলে ফিরে আসায় ফের কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো। আজ রোববার সকাল থেকেই পথেঘাটে দেখা গেছে পোশাককর্মীদের কর্মস্থলের উদ্দেশে ছোটার চিরচেনা দৃশ্য। ঈদের ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে যোগ দিতে দুদিন আগে থেকেই ফিরতে শুরু করেছেন পোশাকশ্রমিকেরা। এবার পোশাক কারখানাগুলোর ছুটি আট দিন হওয়ায় কর্মীরা নির্বিঘ্নে ঈদ উদ্যাপন শেষে ঢাকায় ফিরেছেন।
সাভার, আশুলিয়া ও ঢাকার ধামরাইয়ে ছোট-বড় মিলিয়ে তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে প্রায় দুই হাজারেরও বেশি। আজ সকাল থেকে কারখানাগুলোতে শ্রমিকেরা প্রবেশ করে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেছেন। পোশাক কারখানাগুলো খুলে দেওয়ায় পাশে থাকা চায়ের দোকান, মুদি দোকানসহ বিভিন্ন দোকানও চালু করেছেন দোকানিরা। এতে সাভার ফিরে পেয়েছে আবার আগের রূপ, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে শিল্পাঞ্চল।
পোশাকশ্রমিকেরা জানান, এবার ঈদের ছুটি বেশি দিন পাওয়ায় পরিবারের সঙ্গে ভালোভাবে ঈদ উদ্যাপন করে তাঁরা আবারও কাজে ফিরেছেন। পোশাক কারখানার মালিকেরা বলছেন, দুই বছর করোনাভাইরাস থাকার কারণে এবার ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে তাঁরা কাজ শুরু করেছেন পুরোদমে। কারখানাগুলোতে কাজের অর্ডারও অনেক। তাই শ্রমিকদের দম ফেলার সময় নেই।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানিয়েছে, ঈদের ছুটি শেষে গতকাল শনিবার থেকে দেশের বেশির ভাগ তৈরি পোশাক কারখানা ও অন্যান্য শিল্প কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানার মালিক রুবায়েত আহমেদ জানান, পোশাকশ্রমিক ও টেকনিশিয়ানরা নিজেদের কাজে যোগ দিয়েছেন। বাকি শ্রমিকেরাও আগামী কয়েক দিনের মধ্যে যোগ দেবেন।
রুবায়েত আহমেদ বলেন, ‘আমরা ২৭ এপ্রিল ঈদের ছুটি ঘোষণা করেছিলাম এবং শনিবার কাজে যোগ দেওয়ার সময় নির্ধারণ করেছি, যাতে শ্রমিক ও অন্যান্য কর্মচারীরা তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে।’রুবায়েত আহমেদ জানান, অনেক গার্মেন্টস মালিক ১০ থেকে ১৫ দিনের মতো ঈদের ছুটি ঘোষণা করেছেন।
রুবায়েত আহমেদ আরও বলেন, শনিবার ছুটি শেষ হওয়ায় প্রায় সব কারখানার উৎপাদন শুরু হয়েছে, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে বাকি সব কারখানায় কাজ শুরু হবে। নিটওয়্যার কারখানা মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, ঈদের ছুটির পর শনিবার থেকে বেশির ভাগ পোশাক কারখানায় কাজ শুরু হয়েছে।
ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘কিছু কারখানা শ্রমিকদের প্রয়োজনে একটু বেশি ছুটি দিয়েছে। তারা রোববার বা সোমবার থেকে কারখানা খুলতে শুরু করবে।’ফজলে শামীম এহসান আরও বলেন, দেশে পোশাক শিল্পের সূচনার পর থেকে এবারের ঈদে সবচেয়ে বেশি ছুটি পেয়েছেন শ্রমিকেরা। তিনি বলেন, যেসব কারখানার শিপমেন্ট নিয়ে চাপে ছিল, সেগুলো আবার চালু হয়েছে। আর যেগুলোতে কম চাপ আছে, সেগুলো আরও দুই-তিন দিন পর খুলবে।
ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের কর্মী আনোয়ার হোসেন জানান, মা-বাবার সঙ্গে ঈদের ছুটি ভালোই কেটেছে তাঁর। আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি আজ (শনিবার) কাজ শুরু করেছি। এবার মহাসড়কে ছুটি বা ঈদ যাত্রায় কোনো সমস্যা হয়নি।’ এদিকে, ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাস, লঞ্চ ও ট্রেনের পাশাপাশি ট্রাকে ঢাকা, গাজীপুর, আশুলিয়া, সাভার ও নারায়ণগঞ্জে ফিরছেন পোশাকশ্রমিকেরা।