ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের ওপর হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ (ডিএমপি) দেশের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সতর্ক থাকতে বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সদরদফতর ও ডিএমপি সদরদফতর থেকে বিশেষ এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ডিএমপির কন্ট্রোল রুম থেকে রাজধানীতে কর্মরত ৮টি বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি), অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) এবং সহকারী পুলিশ কমিশনারদের (এসি) সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যেকোনো সময় হামলার ঘটনা ঘটতে পারে, আশঙ্কা পুলিশ সদরদফতরের
নির্দেশনায় বলা হয়, ডিএমপির থানাগুলোতে পুলিশ ফাঁড়ি ও পুলিশ বক্সে যেকোনো সময় হামলার ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য এসব স্থানে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি বাড়াতে হবে। এছাড়া যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানোর জন্য শুক্রবার দিবাগত রাতে ও শনিবার (২৭ মার্চ) সকালে পুলিশ সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। রাজধানীকে নিরাপদ রাখতে রাতে পুলিশের পেট্রোলিং বাড়ানোসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সজাগ থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ডিএমপির দুজন অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) মর্যাদার কর্মকর্তা বিশেষ এ নির্দেশনার কথা নিশ্চিত করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএমপির এক অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) বলেন, শুক্রবার (২৬ মার্চ) দিবাগত রাতে ডিএমপির কন্ট্রোল রুম থেকে আমাদের নিজস্ব ওয়াকিটকিতে এই বার্তা দেওয়া হয়। ডিএমপির সিনিয়র অফিসারদের মাঠে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেসেজ পাওয়ার পরপরই আমরা এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানোর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মর্যাদার এক কর্মকর্তা সূত্র জানায়, পুলিশ সদরদফতর থেকে সারাদেশে কর্মরত এসপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একই ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনো মহল যেন নাশকতার জন্য জমায়েত না হতে পারে সেইজন্য পুলিশকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পুলিশের সব থানা এবং পুলিশের সংশ্লিষ্ট সব অফিসারের নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মর্যাদার একজন কর্মকর্তা বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাতে আমরা পুলিশ সদরদফতর থেকে নির্দেশনা পেয়েছি। পুলিশ সদরদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী ইতোমধ্যে আমরা যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানোর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর ঘিরে প্রতিবাদে নেমে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন ইসলামি দলগুলোর নেতাকর্মীরা। শুক্রবার (২৬ মার্চ) জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ ঘটনায় অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। এদের মধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের আটজন কর্মী আহত হন। পরে আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়।
শুক্রবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে শুক্রবার রাতে ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে রাত ৯টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।