৩০ শতাংশ কারখানার পোশাক শ্রমিকদের ঈদ বোনাস এবং ৭০ শতাংশ কারখানার শ্রমিককে এপ্রিল মাসের ১৫ দিনের বেতন দেয়নি মালিকরা। কল-কারখানায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি তদারকিতে নিয়োজিত শিল্প পুলিশের প্রতিবেদন চিত্রে এ তথ্য উঠে এসেছে।
শিল্প পুলিশের তথ্য মতে, ২৯ এপ্রিল থেকে প্রথমে সপ্তাহিক ছুটি, এরপর ঈদের ছুটি। ফলে ঈদের আগের সর্বশেষ কর্মদিবস ছিল আজ (বৃহস্পতিবার)। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পোশাক খাতের ৪ হাজার কারখানার মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ কারখানায় শ্রমিকদের ঈদ বোনাস দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এখনো বাকি রয়েছে ৩০ শতাংশ কারখানার শ্রমিকদের বোনাস।
আর সরকারি নির্দেশনা অনুসারে, ২৮ এপ্রিলের মধ্যে শ্রমিকদের ন্যূনতম এপ্রিল মাসের প্রথম ১৫ দিনের বেতন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই নির্দেশ অমান্য করেছে ৭০ শতাংশ পোশাক কারখানা মালিকরা। এই সময়ে মাত্র ৩০ শতাংশ কারখানা মালিকরা বেতন দিয়েছে।
এ কারখানাগুলো তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, নিটওয়ার কারখানা মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) সদস্যভুক্ত।
শিল্প পুলিশ আশা করছে, আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ৯০ শতাংশ পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের বোনাস পরিশোধ করবে মালিকরা। তবে পোশাক খাতের বাইরে চামড়াজাত পণ্য, আসবাব, সেলফোন সংযোজন, ওষুধপণ্যসহ অন্যান্য খাতের কারখানা রয়েছে মোট ৬ হাজার। এই কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের কী পরিমাণ বেতন ও বোনাস দেওয়া হয়েছে, তার সঠিক কোনো তথ্য নেই শিল্প পুলিশের কাছে।
এ বিষয়ে শিল্প পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে তাতে দেখছি, ৭০ শতাংশ পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে। আর ৩০ শতাংশ কারখানায় এপ্রিল মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত অধিকাংশ কারখানায় বেতন ও বোনাস পরিশোধ করা হয়ে গেছে। অল্প কিছু কারখানায় বাকি রয়েছে, আগামীকাল ও শনিবারের মধ্যে বেতন ও বোনাস পরিশোধ হয়ে যাবে। ঈদের আগে কোনো শ্রমিকের বেতন ও বোনাস বাকি থাকবে না।
গার্মেন্টস মালিকদের আরেকটি সংগঠন বিএকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের বেশিরভাগ গামেন্টস শ্রমিকদের বোনাস দিয়েছে, কিছু প্রতিষ্ঠান আগামীকাল দেবে। আর কিছু প্রতিষ্ঠান শনিবার বেতন ও বোনাস দিয়ে ঈদের ছুটি দিয়ে দেবে।
জানতে চাইলে শ্রমিক নেত্রী নাজমা আক্তার বলেন, আমরা শঙ্কায় ছিলাম, এবার সময়মতো বেতন-বোনাস পাবেন না শ্রমিকরা। বাস্তবেও তাই ঘটলো। তিনি বলেন, বড় গামেন্টসগুলো বেতন বোনাস দিয়েছে, কিন্তু ছোট গামেন্টস শ্রমিকদের বেতন বোনাস দেয়নি। সরকারের উচিৎ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।