সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অবাধ ব্যবহার, কোনো বিষয়ে ছাড় না দেয়ার প্রবণতা এবং স্বামী-স্ত্রীর অবস্থানগত দূরত্বের কারণে চাঁদপুরে বেড়েছে বিবাহ বিচ্ছেদের হার। পারিবারিক বিরোধ শেষ পর্যন্ত গড়াচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদে। এসব বিচ্ছেদ কমিয়ে আনতে কাজ করছে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ। চাঁদপুরে ২০২০ সালে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় ৩ হাজার ১৮৪টি। পরের বছর এই সংখ্যা বেড়ে দাড়ায় ৩ হাজার ৪৭৬ এ। সরকারি হিসাব বলছে, গত কয়েক বছর ধরেই জেলায় বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ। এ নিয়ে চাঁদপুর সরকারি কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ইয়াহ-হিয়া খান বলেন এই বিশৃঙ্খলা হতে পারে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে, বাবার সাথে সন্তানদের বা মায়ের সাথে সন্তানদের ঝামেলার কারণেও অনেক সময় তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তবে বর্তমান সময়ে এই বিশৃঙ্খলা এখন সামাজিক সমস্যার রূপ নিয়েছে।
কলহ সৃষ্টির জন্য পারিবারিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার বিষয়টি তো রয়েছেই, এর সাথে আছে আরও বেশকিছু কারণ। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অতিরিক্ত আসক্তি, পরকীয়া ও স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে অবস্থানগত দুরত্ব। পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, জেলার ৩০ শতাংশ মানুষ এখন দেশের বাইরে থাকেন। বিদেশ থেকে যারা বাবা-মায়ের কাছে টাকা পাঠাচ্ছেন তাদের স্ত্রীরা অনেক সময় সেই অর্থ পাচ্ছেন না। ফলে অভিযোগ আসে, সঠিকভাবে ভরণপোষণ দিচ্ছে না।
জেলা রেজিস্টার মুশতাক আহমেদের মতে, সামাজিক যোগাযোগের কারণে এখন সঙ্গী নির্বাচনের সুযোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে চাইলেই আরও ভালো কাউকে পেতে পারে, এমন চিন্তা থেকেই হয়তো তালাকের সংখ্যা বেড়ে গেছে। পারিবারিক কলহ মিমাংসায় জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি কাজ করছে পুলিশও। দু’পক্ষকে বোঝাতে সক্ষম হলে সমস্যা সমাধান হয়। কিন্তু যখন কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ, তখনই তৈরি হয় জটিলতা, হয় মামলাও। চাঁদপুরে গত চার বছরে বিবাহ নিবন্ধন হয়েছে ৫৬ হাজার ১১৬টি। আর তালাকের সংখ্যা ১২ হাজার ৯৮০।