ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২০০ যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দেবে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। রমজান উপলক্ষে এপ্রিল মাসের শুরু থেকে যুদ্ধবিরতি চলছে সৌদি-আমিরাত সামরিক জোট ও হুথি বিদ্রোহীদের মধ্যে। হুথি বিদ্রোহীগোষ্ঠীর যুদ্ধবন্দি বিষয়ক কমিটির প্রধান নির্বাহী আবদুল কাদের আল মুরতাদা এ তথ্য জানিয়েছেন। রোববার (২৪ এপ্রিল) এ তথ্য জানানো হয়।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল মুরতাদা বলেন, সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে আমাদের যে বন্দি বিনিময় চুক্তি হয়েছিল, তারই অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ প্রতিনিধিকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমরা আশা করছি, বন্দি বিনিময় প্রশ্নে সৌদি জোটও আন্তরিক হবে।
২০১৫ সালের শুরুর দিকে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ক্ষমতাচ্যুত এ প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।
এ অভিযান শুরুর পর ইয়েমেনের রাজনৈতিক সংকটের অবসান হওয়ার পরিবর্তে তা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। বর্তমানে ইয়েমেনে কার্যত দুই শাসকগোষ্ঠী সক্রিয় আছে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সামরিক সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল এখনও মনসুর হাদির নেতৃত্বাধীন সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে। অন্যদিকে উত্তরাঞ্চল সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে হুথি বিদ্রোহীরা। ইয়েমেনের এ সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্যের লড়াইয়ে সৌদি-ইরানের ছায়াযুদ্ধ হিসেবে দেখা হয়। টানা গৃহযুদ্ধ ও সংঘাত চলার ফলে প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এবং এক সময়ের স্বচ্ছল এ দেশটি।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেনের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ খাদ্য ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের গুরুতর সংকটে ভুগছেন। জাতিসংঘের উদ্যোগে গত মাসে ইয়েমেনে যুদ্ধরত হুথি বিদ্রোহীগোষ্ঠী ও সৌদি-আমিরাত জোটের মধ্যে বন্দি বিনিময় সম্পর্কিত আলোচনা শুরু হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত উভয়পক্ষের মধ্যে কোনো চুক্তি সই হয়নি। এ চুক্তি সই হলে, সৌদি-আমিরাত জোটের হাতে বন্দি প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন হুথি এবং ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আব্দ-রাব্বু মনসুর হাদির ভাইসহ হুথি বিদ্রোহীদের হাতে বন্দি ৮২৩ জন সৌদি ও আমিরাতের নাগরিক মুক্তি পাবেন।