সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার কিশোরীর পরিবারকে গ্রামছাড়া এবং স্বজনদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শুক্রবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে বন্দর থানায় এ মামলা করেন।
আসামিরা হলেন- বন্দরের মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, আমিনুল শেখ (৪০), আলমগীর (২৫), তার ভাই আল আমিন (২৮), বাবা শুকুর আলী (৪৮), মা নাসিমা, আসলাম (২২), জিয়াদ (৪৫), শরিফ (১৯), আরিফ (২৫), রনি (২১), অনিক (২৩), সুমন (২৫), নিলুফা (৪০) আবু তাহের (৪১) ও শামীম (৪০)।
ভুক্তভোগীর মা বলেন, শবে বরাতে তার মেয়েকে আলমগীর ও তার ফুফাতো ভাই রকি মিলে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় দুজনকে আসামি করে বন্দর থানায় মামলা হয়। ঘটনার দুইদিন পর আসামি রকি পালাতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পুলিশ হেফাজতে মারা যায়। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। এই মামলার পর আসামি আলমগীর ও তার পরিবার এবং ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদ ও তার ছেলে শুভ হুমকি-ধমকি দিয়ে তাদের বাড়িছাড়া করে। এছাড়া তাদের স্বজনদের পাঁচটি বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে।
এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে, গত ২০ এপ্রিল ভিকটিমের পরিবারের পক্ষে এক আইনজীবী নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলমের আদালতে একটি পিটিশন মামলার আবেদন করেন। পরবর্তীতে সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বন্দর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। এরপর আদালতের নির্দেশে থানায় মামলাটি রুজু করা হয়।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান খোকন বলেন, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার ২ নম্বর আসামি রকি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়। এ বিষয়ে ধর্ষণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মাহবুব আলম আদালতকে প্রতিবেদন আকারে অবগত করেন। অপমৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা রুজু করা ক্ষমতার অপব্যবহার ও হয়রানিমূলক। একটি সাজানো মামলায় ধর্ষণের শিকার কিশোরীর পরিবার ও স্বজনদের গ্রামছাড়া করে সর্বস্ব লুটে নেয় আসামিরা, যা দুঃখজনক।
এ বিষয়ে মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন বলেন, বললেই কি মামলা হয়ে যায়। কোনো তদন্ত নাই কিছু নাই। মামলা সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ধর্ষণ মামলার বাদীর ওপর হামলা ও তার স্বজনদের বাড়িঘরে লুটপাট এবং মারধরের অভিযোগে চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেনসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা হয়েছে।