‘ব্যবসার সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ চাই। আর কোনো সংঘাত নয়, আমরা দোকান খুলতে চাই। এ বছর ঈদের বাজার ধরতে না পারলে পুঁজি চলে যাবে।’ আকুতি জানিয়ে এসব কথা বলছেন রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীরা। বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতি কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শান্তির আহ্বানে সাদা পতাকা উড়িয়েছেন তারা।
বুধবার বিকেলে নূরজাহান সুপার মার্কেট, নূর ম্যানশন শপিং সেন্টার, গাউছিয়া মার্কেট, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট ও ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের বিভিন্ন দোকানের উপরে ও মার্কেটের ছাদে সাদা পতাকা টানাতে দেখা যায়।
মার্কেট সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতায় শান্তির আহ্বান জানানো হয়েছে। যেকোনো মূল্যেই হোক, তারা দোকান খুলতে চান। গত দুদিনে যে ক্ষতি হয়েছে, তা কাটানোর মত নয়। তাদের দাবি, তারা পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের বিরোধ নেই। তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চান।
ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবীর বলেন, ঘটনা আমাদের সঙ্গে ঘটেনি। কিন্তু তারপরও আমরা দোকান খুলতে পারছি না। সার্বিকভাবে অনেক ক্ষতি হয়েছে। দুই দিনে যে ক্ষতি হয়েছে, তা এ ঈদে প্রতিদিন দোকান খোলা রাখলেও কাটানো সম্ভব নয়। আমরা চাচ্ছি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখতে।
এর আগে বিকেল পাঁচটার দিকে ব্যবসায়ীরা দোকান খোলার চেষ্টা করলে আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নিউ মার্কেট এলাকার পরিস্থিতি। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এ সময় ব্যবসায়ী, পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
পরে ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক ড. মো. আবদুল কুদ্দুস সিকদার, কোষাধ্যক্ষ ওবায়দুল করিম রিয়াজ, দক্ষিণ হলের তত্ত্বাবধায়ক সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার মাহমুদ, দক্ষিণায়ন হলের তত্ত্বাবধায়ক নাসির উদ্দিনসহ অন্য শিক্ষকেরা এসে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে কলেজে নিয়ে যান। বিকেল পৌনে ছয়টা নাগাদ মিরপুর রোডে পুনরায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শাহেন শাহ মাহমুদ বলেন, এখন যান চলাচল স্বাভাবিক আছে। বিকেল সাড়ে পাঁচটার একটু আগে, শিক্ষার্থীদের একটি অংশ বের হয়ে উশৃঙ্খল জনতাকে ধাওয়া দেয়। পরে আমরা অবস্থান নিই। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
দোকান খোলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্যবসায়ী সমিতি ও শিক্ষকদের মধ্যে কথা হয়েছে। এরর কিছু অগ্রগতিও আছে। তারা একসঙ্গে বসতে চেয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইফতারের পর আলোচনায় বসা হবে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নিউমার্কেট খোলা নিয়ে ছাত্রদের আপত্তি রয়েছে। অন্য কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে তাদের তেমন কোনো কথা নেই। বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে।