ঘটনা গত ২৪ মার্চ রাত আনুমানিক সোয়া ১০টার দিকে। সে রাতে নিজ মাইক্রোবাসে করে বাসায় ফিরছিলেন রাজধানীর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু। গাড়িটি শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটার শো-রুমের সামনে এলে যানজটে পড়ে। ঠিক তখনই তার মাইক্রোবাসের পাশে দাঁড়িয়ে গুলি ছোড়ে হেলমেটধারী আততায়ী। মুহূর্তের মধ্যে গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। এলোপাতাড়ি গুলিতে টিপুই নন, সে পথে রিকশা দিয়ে যাওয়া সামিয়া আফরান প্রীতি (১৯) নামের বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজের এক ছাত্রীও নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হন টিপুর গাড়িচালক মুন্না।
হত্যার কাজ সারতে সবমিলিয়ে সময় নেওয়া হয়েছিল মাত্র মিনিটখানেক। এরইমধ্যে হেলমেট পরা ওই ব্যক্তি সড়ক বিভাজক টপকে গুলি করতে করতে রাস্তার অন্য পাশে অপেক্ষায় থাকা একটি মোটরসাইকেলে উঠে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। অনেকটা ফিল্মি স্টাইলে সংঘটিত এ হত্যাকাণ্ড যে পেশাদার কিলার ছাড়া সম্ভব নয়, সেটি শুরুতেই আঁচ করেছিল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে কলেজছাত্রী প্রীতির মৃত্যুতে এ হত্যার ঘটনা সারাদেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। ঘটনার পরপরই জড়িতদের চিহ্নিত ও গ্রেফতার করতে মাঠে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে খুলতে থাকে হত্যা-রহস্যের জট।
টিপু হত্যার পরিকল্পনায় নাসিরকে শুটারদের নাম না জানালেও মুসা শুধু এটুকু বলেছিল যে, এ হত্যাকাণ্ড সম্পন্ন করতে তার ব্যাকআপ প্ল্যানও রয়েছে। কিন্তু ওই রাতে নাছির নিজেই ফোন করে ‘ইট ইজ ডান’ বলার পর মুসার ব্যাকআপ প্ল্যানের আর প্রয়োজন হয়নি।
এক পর্যায়ে জানা যায়, দুবাইয়ে বসে টিপু হত্যার পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দিয়েছিলেন সুমন শিকদার ওরফে মুসা। সে রাতে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পরপরই মো. নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির দুবাইয়ে থাকা মুসাকে ফোনে জানান ‘ইট ইজ ডান’। এরপর নিজেও ঘটনাস্থল থেকে গা-ঢাকা দেন। একটি মোবাইলের দোকানে গিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কয়েকবার ফ্লাশ করে বিক্রি করে দেন। সিমটি দাঁত দিয়ে কামড়ে নষ্ট করে ফেলে দেন সিটি করপোরেশনের ডাস্টবিনে। হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহ পর কিলার নাছির র্যাবের হাতে গ্রেফতার হলেও তার ব্যবহৃত মোবাইল ও সিম উদ্ধার করতে সময় লাগে আরও কয়েকদিন।
পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাবের গোয়েন্দা সূত্র জানায়, টিপু হত্যাকাণ্ডে নাছিরের স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা সবচেয়ে বেশি। কারণ, ২০১৬ সালে স্বার্থগত দ্বন্দ্বে টিপুর অন্যতম সহযোগী রিজভী হাসান ওরফে বোচা বাবু হত্যাকাণ্ডে এক নম্বর আসামি নাছির। এমনকি গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে সে র্যাবকে জানিয়েছে, রিজভী হত্যায় মামলার বিচারিক কার্যক্রম ধীরগতির না হলে তার মৃত্যুদণ্ড হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রায় অর্ধযুগ আগের এ হত্যা মামলার তিন নম্বর আসামি দুবাইয়ে অবস্থানকারী মুসা।
সূত্র আরও জানায়, টিপু হত্যার পরিকল্পনায় নাসিরকে শুটারদের নাম না জানালেও মুসা শুধু এটুকু বলেছিল যে, এ হত্যাকাণ্ড সম্পন্ন করতে তার ব্যাকআপ প্ল্যানও রয়েছে। কিন্তু ওই রাতে নাছির নিজেই ফোন করে ‘ইট ইজ ডান’ বলার পর মুসার ব্যাকআপ প্ল্যানের আর প্রয়োজন হয়নি।
গত ১ এপ্রিল র্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৩ এর অভিযানে রাজধানীর মুগদা, শাহজাহানপুর ও মিরপুর এলাকা হতে মো. নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছিরসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার অন্য তিনজন হলেন- ঘটনার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ওমর ফারুক ও পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ এবং মো. মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ। অভিযানে নজরদারির কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, নগদ তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং মোবাইলসহ উদ্ধার হয় অন্যান্য সামগ্রীও।
পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মোট ১৫ লাখ টাকার চুক্তি হয়। যেখানে ফারুক একাই ৯ লাখ টাকার যোগান দেন। বাকি ৬ লাখ টাকা আসে মুসা, সালেহ ও নাছিরের কাছ থেকে। গত ১২ মার্চ দুবাই যাওয়ার সময় মুসা ৫ লাখ টাকা সঙ্গে নেন এবং হুন্ডির মাধ্যমে তাকে আরও ৪ লাখ টাকা পাঠানো হয়। বাকি ৬ লাখ টাকা দেশে হস্তান্তরের চুক্তি ছিল।
এরপর প্রাথমিক গ্রেফতার ব্যক্তিরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে টিপু ও তাদের (গ্রেফতার ব্যক্তিদের) মধ্যে বিরোধ চলছিল। মতিঝিল এলাকার চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্কুল-কলেজে ভর্তি বাণিজ্য, বাজার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উভয়পক্ষের দ্বন্দ্ব-সংঘাত ছিল চরমে। এরই একপর্যায়ে ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই রাজধানীর গুলশানে শপার্স ওয়ার্ল্ডের সামনে মিল্কী হত্যার ঘটনা ঘটে। টিপু হত্যার ঘটনায় গ্রেফতাররা এলাকায় মিল্কীর সহযোগী হিসেবে পরিচিত।
নয় বছরেরও বেশি সময় আগে মিল্কী হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ওইসময় টিপুর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে ওমর ফারুক ও তার সহযোগীরা। এ হত্যা মামলার বাদীর মাধ্যমে এজাহারে টিপুর নাম অন্তর্ভুক্ত করানো হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে মামলা থেকে অব্যাহতি পান টিপু। এতে ক্ষুব্ধ হয় ওমর ফারুক গং। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে টিপুর সহযোগী রিজভী হাসান ওরফে বোচা বাবু হত্যা। বর্তমানে রিজভী হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।
শুরু থেকেই ফারুক ও তার সহযোগীদের ধারণা ছিল, টিপুর কারণেই রিজভী হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়েছে। এরইমধ্যে মামলার বাদী রিজভীর বাবা আবুল কালামের সঙ্গে ফারুক ও তার সহযোগীরা ৫০ লাখ টাকায় দফারফা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু টিপুর হস্তক্ষেপেই মীমাংসায় যাননি কালাম।
একপর্যায়ে কালামকে হত্যার পরিকল্পনা করে ওমর ফারুকরা। কিন্তু টিপুর সঙ্গে চলাচল করার কারণে তা সম্ভব হয়নি। রিজভী হত্যায় আদালতে কালামের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পরই টিপু হত্যার পরিকল্পনা নেয় তারা। যেন মামলা পরিচালনায় গতি না আসে। তাদের ধারণা ছিল, কালাম একা মামলাটি সঠিকভাবে চালাতে পারবেন না। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মাস তিনেক আগে রিজভীর মামলার সাক্ষ্য শেষে আদালত চত্বর এলাকায় টিপু হত্যার বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা করেন ওমর ফারুকরা।
রিজভী হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সাক্ষী মো. মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশকে অর্থের বিনিময়ে সাক্ষ্যদানে বিরত থাকতে বলা হয়েছিল। এতে মোরশেদুল আলম প্রথমে রাজি হলেও পরে টিপুর চাপে সাক্ষ্য দেন। তবে রিজভী হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার আসামিদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে টিপুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে অংশ নেন মোরশেদুল। এই মোরশেদুলই টিপু হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ফারুক ও মুসাকে ফোনালাপের মাধ্যমে কয়েকজন আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। হত্যাকাণ্ডটি বাস্তবায়নে চূড়ান্ত সমন্বয়ের জন্য গত ১২ মার্চ দুবাই যান হত্যার নির্দেশদাতা সুমন শিকদার ওরফে মুসা।
দুবাই বসে হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন:
র্যাব জানিয়েছে, টিপু হত্যার মধ্য দিয়ে রিজভী হত্যা মামলার মূল আসামিরা মামলাটিকে প্রভাবিত ও বাদীকে ভয় দেখানো যাবে বলে মনে করেন। সে অনুযায়ী টিপু হত্যার পরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়নে সন্ত্রাসী ও শুটার মুসাকে দায়িত্ব দেন রিজভী হত্যা মামলার আসামি বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা ওমর ফারুক। মুসা ও তার ভাই সালেহও রিজভী হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি।
টিপু হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মোট ১৫ লাখ টাকার চুক্তি হয়। যেখানে ফারুক একাই ৯ লাখ টাকার যোগান দেন। বাকি ৬ লাখ টাকা আসে মুসা, সালেহ ও নাছিরের কাছ থেকে। গত ১২ মার্চ দুবাই যাওয়ার সময় মুসা ৫ লাখ টাকা সঙ্গে নেন এবং হুন্ডির মাধ্যমে তাকে আরও ৪ লাখ টাকা পাঠানো হয়। বাকি ৬ লাখ টাকা দেশে হস্তান্তরের চুক্তি ছিল। র্যাবের উদ্ধার করা ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা চুক্তির ৬ লাখ টাকারই অংশ।
নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির সম্পর্কে জানতে চাইলে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জাগো নিউজকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের দিন সকাল থেকে নাছির টিপুকে ফলো করছিলেন। ওইদিন সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সে নিয়মিত টিপুর আপডেট দুবাইতে থাকা মুসার কাছে দিচ্ছিলেন। রাত ১০টা ২৪ মিনিটে টিপুকে গুলি করার পর নাসির মোবাইলে মুসাকে জানায়, ‘ইট ইজ ডান’। টিপুকে গুলি করার পর শুটাররা মোটরসাইকেলে করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। নাছিরও তড়িঘড়ি করে ঘটনাস্থলে নিজের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ফেলেই পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, টিপু হত্যার পর ওই রাতেই মুসার সঙ্গে শেষবার করে বলে বিক্রি করে দেওয়া নাছিরের নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধারের আগে একাধিকবার বিক্রি হয়ে হাত বদল হয়। নাছিরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই সিমটি সিটি করপোরেশনের ময়লার ডাস্টবিন থেকে উদ্ধার করা হয়। একাধিকবার বিক্রি হওয়ায় মোবাইলটি উদ্ধারে একটু সময় লাগে।
উদ্ধার হওয়া নাছিরের সেই মোবাইল ফোনে কোনো আলামত পাওয়া গেছে কি না, জানতে চাইলে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, নাছির বুঝতে পেরেছিল তার মোবাইলে তথ্য থেকে গেলে সেটিই হবে অন্যতম আলামত। এ কারণে তিনি মোবাইলটি একাধিকবার ফ্লাশ করে বিক্রি করে। তার মোবাইল ফরেনসিকের জন্য ল্যাবে পাঠানো হবে।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পর ওইদিন রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে টিপুর স্ত্রী অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুর থানার ২০২ উত্তর শাহজাহানপুর মানামা ভবনের বাটার দোকানের সামনে পৌঁছার পরই অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা হামলা করেন। তারা তার স্বামী জাহিদুল ইসলাম টিপুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়।
টিপু-প্রীতি হত্যার ৪৮ ঘণ্টা পর গত ২৬ মার্চ গ্রেফতার হন মূল শুটার মো. মাসুম ওরফে আকাশ। গত ৫ এপ্রিল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন গ্রেফতার মাসুম। অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) তোফাজ্জল হোসেন তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ শেষে ওইদিনই সন্ধ্যায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। আদালত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে, টিপুকে গুলি করে হত্যার কথা জবানবন্দিতে স্বীকার করেছেন শুটার মাসুম। বন্ধু মোল্লা শামীমের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে সেদিন ঘটনাস্থলে যান তিনি। টিপুকে গুলি করে শামীমের মোটরসাইকেলে করেই এলাকা ছাড়েন।
টিপু হত্যাকাণ্ডে অস্ত্র ও মোটরসাইকেলের জোগানদাতার বিষয়ে জবানবন্দিতে শুটার মাসুম আদালতকে জানান, হত্যাকাণ্ডের দিন (গত ২৪ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে রাজধানীর গোড়ান ছাপড়া মসজিদের উল্টো পাশের গলিতে গ্রেফতার শুটার মো. মাসুম ওরফে আকাশ ও পলাতক আকাশের বন্ধু মোল্লা শামীমের কাছে একটি ব্যাগ ও একটি মোটরসাইকেল দিয়ে যায় ওই সাপ্লাইয়ার। ব্যাগটিতে ছিল একটি অস্ত্র। রাত সাড়ে ১০টার দিকে টিপুকে গুলি করার পর রাতেই গোড়ান ছাপড়া মসজিদের উল্টো পাশের গলিতে একই স্থানে শুটার মাসুম ও শামীম অস্ত্র এবং মোটরসাইকেলটি ওই ব্যক্তির কাছে ফেরত দিয়ে তারা যে যার মতো চলে যান।