আধিপত্য বিস্তার ও অঞ্চলভিত্তিক ঈদ বোনাসের টাকা তোলাকে কেন্দ্র করে তৃতীয় লিঙ্গের দুই গ্রুপের মধ্যে ভোলায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাতজন আহত হয়ে ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সোমবার (১১ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে দৌলতখান উপজেলার বাংলাবাজার বটতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- স্বর্ণা, রিদিলা, জারা, সুমনা, সাগরিকা, পাপড়ি ও শারমিন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন।
আহত রিদিলা বলেন, ইফতারের পরে আমরা সাতজন দৌলতখান উপজেলার বাংলাবাজার বটতলা বাজারে রোজা ও ঈদ উপলক্ষে চাঁদা তুলতে যাই। রাত ৮টার দিকে দৌলতখান উপজেলার সর্দার ময়নার নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি দল এসে আমাদের জানায়, বাজার কমিটির লোকজন আমাদের ডাকছে। এই বলে তারা বাজার থেকে পাশে নিয়ে যাই। সেখানে ময়নার লোকজন আমাদের লাঠিসোঁটা দিয়ে মারতে থাকে। এক পর্যায়ে ময়না খুর, চাপাতি ও লোহার পাইপ নিয়ে এসে আমাদের ওপর এলোপাতাড়ি হামলা করে। আমাদের খুর ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। তার সঙ্গে থাকা লোকজন আমাদের থেকে টাকা-পয়সা ও সোনার চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
আহত সাগরিকা বলেন, আমরা তো ময়নার এলাকায় ঢুকে বা তার থেকে ঈদ বোনাসের টাকা উঠাইনি। আমরা সদর উপজেলার বডারে সাধারণ মানুষ থেকে ঈদ উপলক্ষে চাঁদা তুলছিলাম। আমাদের মারলে সাধারণ মানুষ মারতে পারে। ময়নার তো মারার কথা না। আমাদের ওপর হামলার কঠিন বিচার চাই।
সদর উপজেলার তৃতীয় লিঙ্গের সর্দার জুই বলেন, চরফ্যাশন, বোরহানউদ্দিন উপজেলার আদুরি, মাদুরী ও পায়েল প্রায় সময় আমাদের মোবাইল ফোনে হুমকি দিতে। আমরা যেন ভোলা থেকে চলে যাই। আজ তাদের কথা না শোনায় দৌলতখানের ময়নাকে দিয়ে আমার শীর্ষদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। আমরা অসহায়। আমরা মানুষের কাছ থেকে ৫-১০ টাকা চাইয়া নেই। ওই টাকা দিয়া দুইডা ডাল ভাত খাইয়া জীবন চালাই। এভাবে চলতে থাকলে আমরা কীভাবে বাঁচব। কিছু দিন আগে হুমকি দিছে, আজ মারছে, কালকে হয়তো মেরেই ফেলবে। ওরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে, টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়, আর দোষ দেয় আমাদের। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
খবর পেয়ে সদর হাসপাতালে দেখতে এসে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো.ফরহাদ সরদার জানান, ভোলা সদর উপজেলার জুই গ্রুপের সদস্যরা দৌলতখান উপজেলার বটতলায় চাঁদা তুলতে গেলে দৌলতখানের ময়না গ্রুপে সর্দার ময়নাসহ স্থানীয় ১০-১২ জন ছেলে মিলে তাদের ওপর হামলা করে। এতে একজন গুরুতর আহতসহ আরও ৬ জন আহত হয়েছেন। বিষয়টি জানার পর পরই আমাদের টহল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পাশাপাশি এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।