ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে রুশ বাহিনী সরে যাওয়ার পর সেখানে বেসামরিক নাগরিক হত্যার আলামত ক্রমশ বাড়ছে। কিয়েভের বাইরে বুচা শহরের রাস্তায় সাংবাদিকরা বেশ কয়েকটি লাশ খুঁজে পেয়েছেন। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই হত্যাযজ্ঞ ‘ইচ্ছাকৃত’ বলে অভিযোগ করেছেন। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ঘটনায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিন্দা জানানো হচ্ছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বুচা শহরে একটি স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। এক টুইটে গুতেরেস বলেন, বুচা শহরের রাস্তায় বেসামরিক নাগরিকদের মরদেহের ছবি দেখে আমি স্তম্ভিত। এটি অপরিহার্য যে এই ঘটনায় একটি স্বাধীন তদন্তের প্রয়োজন আছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরুর দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে কিইভের উপকণ্ঠে বুচা নামের ওই শহরে পৌঁছে গিয়েছিল রুশ বাহিনী। সেখানে রাশিয়ার ট্যাংক ও সামরিক বাহনের একটি কলাম ইউক্রেইনীয় বাহিনীর চোরাগোপ্তা হামলায় পড়ে ধ্বংস হয়। বিভিন্ন দেশ বুচায় রাশিয়ার সেনাদের ওই হত্যাযজ্ঞের নিন্দা জানাচ্ছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বুচা থেকে আসা ছবি অসহনীয় বলে বর্ণনা করেছেন। ইউক্রেইনের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, রুশ কর্তৃপক্ষকে এই অপরাধের জবাব দিতে হবে।
ন্যাটোর মহাসচিব জেনারেল ইয়েন্স স্টলটেনবার্গও বুচায় বেসামরিক নাগরিক হত্যা ‘মেনে নেওয়া যায় না’ বলে মন্তব্য করেছেন। সিএনএন–কে তিনি বলেন, ইউরোপে আমরা বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে এমন বর্বরতা অনেক দশক ধরে দেখিনি। এ ঘটনাই যুদ্ধ বন্ধের প্রয়োজনীয়তা সামনে নিয়ে এসেছে, বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রও বুচায় হত্যাযজ্ঞের নিন্দা করে বলেছে, ইউক্রেইনে রাশিয়ার চলমান নৃশংসতায় প্রতিটি দিন কী ঘটে চলেছে তার বাস্তব চিত্র এটি। জার্মানি বুচায় রাশিয়ার হত্যাযজ্ঞকে ‘ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়েছে এবং যুক্তরাজ্য এই বেপরোয়া হত্যাযজ্ঞের তদন্ত আহ্বান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ইউক্রেনে আগ্রাসনের নামে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে রুশ বাহিনী। সেই সত্য আড়াল করতে ক্রেমলিনের কোনো বিভ্রান্তি ছড়ানো কাজে আসবে না।
তবে, এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া। এক বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করে, এই ঘটনায় তাদের কোনো হাত নেই। ইউক্রেনের প্ররোচনাতেই এমনটি হয়েছে। শহরটি দখলের সময় কোনো বেসামরিক নিহতের ঘটনা ঘটেনি। গত ৩০ মার্চ বুচা ছেড়েছে রুশ বাহিনী। যেসব ছবি ও ভিডিও ছড়িয়েছে তা ইউক্রেনীয় বাহিনীর কর্তৃক ছড়ানো ভূয়া তথ্য।