রাশিয়ার বাহিনীর কাছ থেকে রাজধানী কিয়েভের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করার পর আশপাশের শত শত মরদেহ একটি গণকবরে দাফন করা হয়েছে। কিয়েভের বাইরে কমিউটার শহর বুচায় এ গণকবর দেওয়া হয়। শনিবার বুচা শহরের মেয়র আনাতোলি ফেডোরুক ফোনে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, বুচায় আমরা ইতোমধ্যেই ২৮০ জনকে গণকবরে দাফন করেছি। খবর আলজাজিরার
তিনি বলেন, ব্যাপকভাবে ধ্বংস হওয়া শহরটির রাস্তাগুলো লাশে ছেয়ে গেছে। এসব লোকদের মাথার পেছনে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ফেডোরুক। মৃতদের মধ্যে নারী-পুরুষ উভয়ই রয়েছেন। এছাড়া মৃতদের মধ্যে ১৪ বছরের একটি ছেলেকেও দেখতে পেয়েছেন বলে বর্ণনা করেছেন বুচার মেয়র।
এছাড়া মেয়র ফেডোরুক আলজাজিরাকে নিশ্চিত করেন, তিনি বুচার রাস্তায় অন্তত ২২টি মরদেহ নিজ চোখে দেখেছেন। এসব মরদেহ এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নিও বলেও জানান তিনি। পশ্চিম ইউক্রেনের লাভিভ থেকে আলজাজিরার রব ম্যাকব্রাইড বলছেন, ফেডোরুক দাবি করছেন, রাশিয়ার সৈন্যরা ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিকদের লক্ষ্যবস্তু করেছেন। মূলত তিনি বলতে চেয়েছেন, তার শহরে বেসামরিকদের ওপর একটি গণহত্যা চালানো হয়েছে।
বুচা শহরটি গত কয়েক সপ্তাহে ভয়ঙ্কর লড়াই দেখেছে এবং এই সপ্তাহে এটি পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত প্রায় এক মাস রাশিয়ার দখলে ছিল। ম্যাকব্রাইড বলছেন, শহরটির মেয়রের মতে, ইউক্রেনীয় অধ্যুষিত অঞ্চলে যখনই কেউ পালানোর চেষ্টা করেছেন, তখনই তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া রুশ বাহিনী ইউক্রেনের অন্যান্য শহরেও বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়টি বলছে, ইউক্রেন এগিয়ে যাচ্ছে এবং রুশ সৈন্য প্রত্যাহার করা হচ্ছে। অঞ্চল ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তখন হয়ত বুচার চেয়ে আরও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি অবিষ্কার হতে পারে অন্য কোনো শহরে। এসব এখন উন্মোচিত হওয়ার অপেক্ষা। এদিকে রাজধানী কিয়েভের আশপাশের এলাকাগুলো রুশ সেনাদের কাছ থেকে পুনরায় নিজেদের দখলে নেওয়ার দাবি করেছে ইউক্রেন। রাশিয়ার হামলা শুরুর পর শনিবার এই প্রথম কিয়েভ ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চল পুরো নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি উঠল।
মূলত রুশ বাহিনী ইউক্রেনের পূর্ব দিকে যুদ্ধের জন্য পুনরায় সংগঠিত হচ্ছে। তবে কিয়েভের আশাপাশের এলাকায় ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলে ধ্বংস হওয়া রাশিয়ার ট্যাংক পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ওকেকসি আরেস্তোভিচ বলেন, চলতি সপ্তাহে ওই এলাকা থেকে রুশ বাহিনী প্রত্যাহার করার পর থেকে ৩০টিরও বেশি শহর ও গ্রাম পুনরুদ্ধার করেছেন তাদের সেনারা।