বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে সেনাবাহিনীর দুই জেনারেলকে বরখাস্ত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি নিজেই। এরা হলেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনীর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের সাবেক প্রধান নাওমভ আন্দ্রেই ওলেহোভিচ ও বাহিনীর খেরসন শাখার প্রধান ক্রিভোরুশকো সেরহেই ওলেকসান্দ্রোভিচ।
বরখাস্ত দুই জেনারেলকে ‘খলনায়ক’ হিসেবে উল্লেখ করে জেলেনস্কি হুঁশিয়ারি দেন— ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর আরও কয়েকজন কর্মকর্তাকে বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। পরবর্তিতে সময়মতো তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। সেখানে তিনি বলেন, ‘আজ আমি দেশের সেনাবাহিনী থেকে দুই খলনায়ককে বরখাস্ত করেছি। এই মুহূর্তে সব বিশ্বাসঘাতকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার মতো সময় আমার নেই; তবে তাদেরকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে এবং সময়মতো তাদেরকে শাস্তি দেওয়া হবে।’
সেনা কর্মকর্তাদের হুঁশিয়ার করে ভিডিওবার্তায় জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে এখনও যারা এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি যে তাদের মাতৃভূমি আসলে কোথায় এবং ইউক্রেনের জনগণের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার শপথ নেওয়া সত্ত্বেও তার লঙ্ঘণ করেছেন, যে কোনো সময় তাদেরকে চাকরিচ্যুত করা হবে। যথেচ্ছাচারী সেনা কর্মকর্তাদের কোনো জায়গা ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে নেই।’
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। অভিযান শুরুর দু’দিন আগে, ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া।
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ও প্রধান বন্দরনগরী বর্তমানে রুশ বাহিনীর দখলে আছে। গত ৩ মার্চ শহরটির দখল নেয় রুশ সেনারা।
একসময়ের সোভিয়েত রাষ্ট্র ইউক্রেন ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়; কিন্তু তার পর থেকেই ইউক্রেনের মূল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয় দেশটিতে বসবাসরত রুশভাষী জনগোষ্ঠীর।
ইউক্রেনের মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশেরও বেশি জাতিগতভাবে রুশ। বহুবছর ধরে তারা ইউক্রেন থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করতে চাইছে এবং স্বাধীনতার পর থেকে শুরু হওয়া এই দ্বন্দ্বে এখন পর্যন্ত দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ লাখ মানুষ।