আগামী জুনে খুলে দেওয়ার জন্য চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি পদ্মা সেতু। শুরু থেকে একদিনের জন্যও থেকে থাকেনি পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ। ফিনিংশসহ আনুষঙ্গিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন সেখানে কর্মরত প্রকৌশলী-শ্রমিকরা।
বুধবার (৩০ মার্চ) দুপুরে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানান, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার মূল সেতুর প্রায় ৯৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের ৯১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেতুর অবশিষ্ট কাজের মধ্যে ওয়াটার প্রুফিং মেমব্রিন, ভায়াডাক্ট কার্পেটিং, মূল সেতুর কার্পেটিং, ল্যাম্পপোস্ট স্থাপনের কাজ চলছে। এছাড়া অ্যালুমিনিয়াম রেলিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। সেতুতে আলোক সজ্জার জন্য ৩২৮ ল্যাম্পপোস্টের মধ্যে ১৪৫ বসানো হয়েছে। বাকি গুলোর বসানোর কাজ চলছে।
চীনের তৈরি ল্যাম্পপোস্টের ওজন ২৭৫ কেজি। এটির দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ২ মিটার। প্রতিটি ল্যাম্পপোস্টে বসানো হবে ১৭৫ ওয়াটের এলইডি বাল্ব। এপ্রিলের মাঝামাঝি ল্যাম্পপোস্ট বসানোর কাজ শেষ হবে। শিগগিরই সাইন মার্কিং, রোডমার্কিং ও সাইড সিগনালের কাজ শুরু হবে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের মাধ্যমে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন পেতে যাচ্ছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। এর জন্য আলাদা করে সাতটি পিলার বসানো হচ্ছে। এতে করে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, পায়রা বন্দরসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলো উপকার পাবে। সেতুর স্টিলের তৈরি কাঠামোতে লাইন টানা সম্ভব নয়। তাই আলাদা করে সাতটি বিদ্যুতের খুঁটি বসানো হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ ৭৭ ভাগ কাজ এগিয়েছে।
মূল সেতুর সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে চলছে নদী শাসনের কাজ। এ পর্যন্ত এগিয়েছে ৮৯ শতাংশ কাজ। ৮ হাজার ৯৭২ কোটি টাকার চুক্তিমূল্যের নদী শাসন কাজের বাকি ১১ শতাংশ।
পদ্মা সেতুর সহকারী প্রকৌশলী আহম্মদ আহসান উল্লাহ মজুমদার জানান, মাওয়া প্রান্ত থেকে পাইপলাইলে গ্যাস যাবে গোপালগঞ্জ-খুলনাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে। সেতুর ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার অংশে ৫৩১টি পাইপ বসানো হয়ে। পাইপগুলোর দৈর্ঘ্য ১২ মিটার, ব্যাস ৭৬০ মিলিমিটার। একেকটির ওজন পাঁচ দশমিক ৬৭ টন।
এর আগে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর সেতুর শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্ত ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্যদিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারে ৪১তম স্প্যানে দৃশ্যমান হয় মূল সেতুর পুরো অংশ। ২০২১ সালের ২০জুন রেলওয়ে স্ল্যাব ও ২৩ আগস্ট সর্বশেষ সড়ক স্ল্যাব বসানো হয়।