সরকারি অনুদান পেতে চলতি বছর দেশব্যাপী প্রায় ২০ লাখ শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আবেদন করেছেন। গত বছর এ আবেদনের সংখ্যা ছিল মাত্র ৫০ হাজার। সে তুলনায় এবার সাড়ে ১৯ লাখ বেড়েছে। শিক্ষার্থী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজস্ব খাত থেকে অনুদান হিসেবে ১১ কোটি টাকা দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও মেধাবী, অসচ্ছল, প্রতিবন্ধী, জটিল ও ব্যয়বহুল রোগে আক্রান্ত, দুর্ঘটনাকবলিত শিক্ষার্থীদের সহায়তা দেওয়া হয়। এ বছর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে বিভিন্ন ধাপে ৬ কোটি এবং কারিগরি ও মাদরাসা পর্যায়ে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অবেদন যাচাই-বাছাইয়ের পর যোগ্যদের ব্যাংক হিসাবে এ টাকা পাঠানো হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অনুদান প্রদানে একটি নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালায় দেখা গেছে, ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এ অনুদান দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরও অনলাইনে আবেদন চাওয়া হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ১৫ মার্চ এবং কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের আবেদন ১০ মার্চ পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়।
জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় গত ১ ফেব্রুয়ারি এবং কারিগরিতে ১৮ ফেব্রুয়ারি অনলাইন আবেদন কার্যক্রম শুরু হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় আবেদন সময় ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সার্ভার জটিলার কারণে তা ১৫ মার্চ শেষ হয়। আর কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগে ২১ মার্চ পর্যন্ত আবেদন চলে। এবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের তিনটি বিভাগে প্রায় ১৫ লাখ আবেদন জমা পড়েছে। আর কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগে ৫ লাখ ৬ হাজার ৪৫টি আবেদন জমা পড়েছে। গত বছর এ দুই বিভাগে প্রায় ৫০ হাজার আবেদন জমা পড়েছিল।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এ বছর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে ৬ কোটি টাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অনুদান দেওয়া হবে। তার মধ্যে এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১ লাখ, একজন শিক্ষক-কর্মচারীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার, শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৮ হাজার, উচ্চমাধ্যমিকে ৯ হাজার, স্নাতক/সমমান পর্যায়ে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে মোট অর্থের ২০ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, ১০ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারীদের এবং ৭০ শতাংশ সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, আমার বিভাগের আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে যোগ্যদের দ্রুত এ অনুদান দেওয়া হবে।
আবেদন বেশি হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনুদান নিয়ে অনেক গুজব ছড়ানো হয়েছে। সবাই মনে করেছিল আবেদন করলেই টাকা পাওয়া যাবে। এ ধারণা থেকেই এবার বেশি সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারী আবেদন করেছেন।