চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণ ও গর্ভপাতের ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (২৩ মার্চ) রাতে হাজীগঞ্জ পৌরসভার মকিমাবাদ এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ।
আটকরা হলেন- ধর্ষণে অভিযুক্ত মো. সিরাজুল ইসলাম, তার মেয়ে মোছা. বকুল বেগম, পুত্রবধূ সীমা আক্তার ও ইসলামিয়া মডেল হাসপাতালের আয়া নাজমা বেগম।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ধর্ষণে অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম ওই কিশোরীর দূর সম্পর্কের নানা হন। সেই সুবাদে তিনি প্রায়ই ওই কিশোরীর বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন।
পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ জানান, কিছু দিন আগে ওই কিশোরীর শারীরিক পরিবর্তন ঘটে। তার মা প্রথমে বিষয়টি লক্ষ্য করেন। পরে মায়ের জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়- গত বছরের ১০ অক্টোবর বাবা-মা বাড়িতে না থাকার সুযোগে সিরাজুল ইসলাম তাদের ঘরে আসে এবং তাকে বিভিন্ন উপহার সামগ্রীর প্রলোভন দেখিয়ে প্রথম ধর্ষণ করে। কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকি দেয়। এভাবে বিভিন্ন সময়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে সিরাজুল ইসলাম। এতে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সিরাজুল ইসলামের মেয়ে বকুল ও তার পুত্রবধূ সীমা ওই কিশোরীকে ইসলামিয়া মডেল হাসপাতালে আল্ট্রাসনো করে জানতে পারে সে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পরে ওই হাসপাতালের আয়া নাজমা বেগমের সহায়তায় কিশোরীর গর্ভপাতের পরিকল্পনা করে তারা। গত ২৩ মার্চ সিরাজুল ইসলামের মেয়ে বকুলের মকিমাবাদের ভাড়া বাসায় তারা তা বাস্তবায়ন করে। নবজাতক শিশুর মরদেহ ডাস্টবিনে ফেলে দেয়।
গোপন সংবাদের মাধ্যমে বিষয়টি পুলিশ জানতে পেরে অভিযান পরিচালনা করে প্রথমে সিরাজুল ইসলামের মেয়ে বকুল, পুত্রবধূ সীমা আক্তারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাদের এবং ওই কিশোরীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে সিরাজুল ইসলাম ও আয়া নাজমা বেগমকে আটক করে পুলিশ। আটকদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মকিমাবাদ এলাকার ডাস্টবিন থেকে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি যে হাজীগঞ্জের একটি বাসায় এ ধরনের একটি অবৈধ গর্ভপাত করা হয়েছে। সেই সংবাদের ভিত্তিতে হাজীগঞ্জ থানার ওসি জুবায়ের সৈয়দ অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে আটক করে। আটকদের বিরুদ্ধে ভ্রুণ হত্যা ও ভ্রুণ হত্যায় সহযোগিতার অভিযোগে মামলা করা হবে।