ধানমণ্ডি আবাসিক এলাকার কল্যাণে গঠন করা হয়েছে অলাভজনক ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ধানমণ্ডি সোসাইটি। এলাকার উন্নয়নের যাবতীয় কার্যক্রম নিয়ে কাজ করবে এই প্রতিষ্ঠান। সোমবার (২১ মার্চ) অনুষ্ঠিত হলো ধানমণ্ডি সোসাইটির কার্যনির্বাহী কমিটির পরিচিতি সভা। দুপুরে ধানমণ্ডির একটি রেস্টুরেন্টে সদস্যদের পরিচিতি উপলক্ষে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধানমণ্ডি সোসাইটির সভাপতি আবু মুহাম্মদ সবুর। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ডা. মোসাদ্দেক হাবিব (মিতু)।
সভাপতির বক্তব্যে সোসাইটির সভাপতি আবু মুহাম্মদ সবুর বলেন, ঢাকাকে বাংলাদেশের রাজধানী বলা হয়, তবে ধানমণ্ডি হলো ঢাকার রাজধানী। ক্রীড়া-শিক্ষা-সংস্কৃতি, আর্থ-সমাজনীতি কিংবা রাজনীতি-ই বলি, ঐতিহ্যবাহী ধানমণ্ডি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইতিহাসেরও অংশ। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, ক্রমাগত বাণিজ্যিক আগ্রাসন, পরিবেশ দুষণ ও সামাজিক বিশৃঙ্খলায় ঐতিহ্যবাহী ধানমণ্ডি আজ তার আবাসিক মর্যাদাটুকু প্রায় হারাতে চলেছে। এমতাবস্থায় একজন সচেতন ধানমণ্ডিবাসী হিসেবে নীরব থেকে সামাজিক দায়িত্ববোধ এড়িয়ে যেতে পারি না। ধানমণ্ডির হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সবার আগে প্রয়োজন সকল বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা। আর আলোচনার জন্য একটি অরাজনৈতিক সামাজিক ফোরাম তৈরি করা, কমিটি গঠনের মাধ্যমে। সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা এবং স্বেচ্ছাসেবী উপকমিটি গঠনের মাধ্যমে সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করা। সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে, সেই উদ্দেশ্য আদর্শকে সামনে রেখেই- ধানমণ্ডির স্থানীয় সমাজসচেতন গণ্যমান্য সুযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে অবশেষে আমরা ধানমণ্ডি সোসাইটি গড়ে তুলতে সফল হয়েছি।
তিনি বলেন, লেক, পার্ক এবং খেলার মাঠের উন্নয়ন, সবুজায়ন ও সৌন্দর্য বর্ধনে বৃক্ষরোপন পরিচর্যা সংরক্ষণ ও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে স্থানীয় অধিবাসীদের বিভিন্ন সুযোগে নিশ্চিত করা হবে। সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ডা. মোসাদ্দেক হাবিব বলেন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং জীবন ও জীবনযাত্রার নিরাপত্তা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো বিবেচনায় নিয়ে সামাজিক শৃঙ্খলা এবং সার্বিক কল্যাণে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা ও বিভিন্ন ক্রীড়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে এই সোসাইটির অন্যতম কাজ। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে ধানমণ্ডির সড়ক উপসড়কে যানজট নিরসন, দুর্ঘটনারোধ ও পথচারীদের নির্বিঘ্ন চলাচলে অবৈধ্য ভ্রাম্যমান দোকান, ফুটপাথ অবমুক্তকরণে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা এবং উপসড়কে রোডসাইন ব্যবহার করে একমুখী চলাচল নিশ্চিত করা হবে। ইলেক্ট্রনিক্স নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্বলিত নিরাপত্তাকর্মীর মাধ্যমে এলাকার প্রবেশ এবং প্রস্থানমুখের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে এলাকায় নিয়মিত বর্জ্য নিরসন, রাস্তাঘাট পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও সুনিশ্চিত করার বিষয়টিও দেখা হবে।
অনুষ্ঠানে ধানমণ্ডির উন্নয়নের যাবতীয় কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করা হয়। একইসঙ্গে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়। এছাড়া স্থানীয় সাংসদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং স্থানীয় কাউন্সিলর এই সোসাইটির পাশে থেকে সোসাইটির কার্যক্রমে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করবেন বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। সোসাইটির কার্যনির্বাহী সদস্যরা হলেন, সভাপতি আবু মোহাম্মদ সবুর, সহ- সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. লিয়াকত হোসাইন (মিলন) ও মো. মনির হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক ডা. মোসাদ্দক হাবিব (মিতু), যুগ্ন সম্পাদক এ কামাল অনু, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল খান (অলক), অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ সাদ উল্লাহ, দপ্তর সম্পাদক মো. শরিফুল হক, নারী বিষয়ক সম্পাদক দিলারা হাফিজ, জন কল্যাণ সম্পাদক এ. এম. কামাল, শিক্ষা ও আইন বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ অনীক রুশদ হক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক সৈয়দ আশেক আলী, কমিউনিটি স্বাস্থ্য সম্পাদক হোসাইন এ সিকদার, কমিউনিটি পরিবেশ সম্পাদক মো. তারেক রহমান, ক্রীড়া সম্পাদক মো. তৈয়ব আফজাল, গণমাধ্যম ও যোগাযোগ সম্পাদক মো. ইসাম, জনসংযোগ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান, সদস্য ডা. মেহরাজ রহমান চৌধুরী এবং খান মো. ওসামা সালেহিন।