ইউক্রেনে রুশ সেনারা সামরিক অভিযান শুরু করে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি। সেই আগ্রাসন ঠেকাতে ২৬ দিন ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনের সেনারা। এই যুদ্ধে বেসামরিক মানুষরাও অংশ নিয়েছেন। তবে রুশ হামলায় কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পুরো ইউক্রেন। দেশটির অনেক অঞ্চল এখন রাশিয়ার দখলে।
এই যুদ্ধ ঠেকাতে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে বেশ কয়েকবার ‘শান্তি আলোচনা’ হয়েছে। কিন্তু সেই আলোচনা ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে চলমান যুদ্ধ নিয়ে সরাসরি আলোচনায় বসার জন্য শনিবার (১৯ মার্চ) রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি আহ্বান জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে তার সেই আহ্বানে সাড়া দেননি পুতিন। ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে যখন রুশ হামলা চলছে, তখনই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, ভ্লাদিমির পুতিন শান্তি আলোচনার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সশরীরে সাক্ষাৎ করতে ‘অবশেষে’ সম্মত হয়েছেন।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করে পুতিন আলোচনা করবেন বলে এক রিপোর্টে জানিয়েছে দি এক্সপ্রেস। মারিওপোলের একটি আর্ট স্কুল ও থিয়েটারে বোমা হামলার মধ্যে রাশিয়াকে ‘যুদ্ধাপরাধের’ জন্য অভিযুক্ত করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। সেখানে বেসামরিক নাগরিকরা আশ্রয় নিয়েছিল।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দুই নেতা তাদের কূটনৈতিক প্রতিনিধিদলকে ‘শান্তি আলোচনা’ করতে দিয়েছে। কিন্তু বিবিসির একজন সংবাদদাতা নিশ্চিত করেছেন যে, পুতিন ও জেলেনস্কি ব্যক্তিগতভাবে মিলিত হবেন। পুতিনকে যেকোনো সময় আলোচনার নেতৃত্ব দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বিবিসির লিসে ডুসেট।
লিসে ডুসেট বলেন, কূটনীতিকরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা বুঝতে পেরেছি যে, প্রেসিডেন্ট পুতিন অবশেষে একমত হয়েছেন যে, তিনি একপর্যায়ে জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করবেন। গত জানুয়ারি থেকেই জেলেনস্কি এই আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করে আসছেন। তবে এই শান্তি আলোচনা ঠিক কবে ও কোথায় বসতে পারে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানা যায়নি।
তবে শান্তি আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করে শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি চাই সবাই এখন আমার কথা শুনুক, বিশেষ করে মস্কো। একটি সভার সময় এসেছে, এখন কথা বলার সময় এসেছে’। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘এখন সময় এসেছে ইউক্রেনের জন্য আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও ন্যায়বিচার ফিরিয়ে আনার। অন্যথায়, রাশিয়ার ক্ষতি এতটাই হবে যে, এটি পুনরুদ্ধার করতে কয়েক প্রজন্ম সময় লাগবে’।