ফেসবুক লাইভে কথা বলে হঠাৎ উত্তেজনা ছড়িয়েছেন সাকিব আল হাসান। বিসিবির দুই পরিচালক ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি প্রধান আকরাম খানের ওপর সরাসরি অভিযোগের তীর ছুড়েছেন, হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের চেয়ারম্যান নাইমুর রহমান দুর্জয়ের নাম প্রকাশ না করেও এইচপির কার্যক্রমের সমালোচনা করতেও ছাড়েননি।
সাকিবের বক্তব্যটা একান্তই তার নিজের এবং সেখানে তিনি বিসিবির দুটি স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যক্রম নিয়ে কথা বলেছেন। এর মধ্যে আকরাম খানের প্রতি সরাসরি অভিযোগ তার। আর বিসিবির অন্য পরিচালক ও বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যক্রম নিয়ে কথা বলতে গিয়ে পরবর্তী প্রজন্ম তৈরির ক্ষেত্রে এইচপির কার্যকরিতা কম বলেও দাবি করেন।
ঐ দুই বক্তব্যে খালি চোখে মনে হতে পারে এটা শুধু আকরাম খান আর নাইমুর রহমান দুর্জয়কে উদ্দেশ্য করে। কিন্তু বিষয়টা ঠিক তেমন নয়। বিসিবির সঙ্গে চুক্তিভুক্ত কোন ক্রিকেটার বোর্ডের একজন পরিচালকের ব্যাপারে সরাসরি অমন অভিযোগ করতে পারেন কি না? অন্য কোনো ডিপার্টমেন্টের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তোলার এখতিয়ার আছে কি না?- এ ব্যাপারে বোর্ডের ভাষ্য কী? অভিযোগের জবাবে আকরাম ও দুর্জয়ের বক্তব্যই বা কী? এ কৌতূহল ছিল সবার।
কিন্তু সারাদিনে তারা কেউ সরাসরি কোন মন্তব্য করেননি। শুধু জানিয়েছেন, যা বলা হবে সেটা অফিসিয়ালিই জানানো হবে। কথা বলা থেকে বিরত ছিলেন বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজনও। এর মধ্যে সন্ধ্যার পর হঠাৎ খবর, গুলশানে নিজ বাসায় বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বৈঠক ডেকেছেন।
কারও কারও ধারণা ছিল, ঐ বৈঠকের পর মিডিয়ায় কথা বলবেন বিসিবি সভপতি। তবে শেষপর্যন্ত বিসিবি বস ঐ অনির্ধারিত বৈঠকের পর আজ মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেননি। ঐ বৈঠক নিয়েও কথা বলতে রাজি হননি কেউ।
জানা গেছে, বিসিবি সভাপতির বাসার ঐ বৈঠকে নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে বোর্ড পরিচালক মাহবুব আনাম, ইসমাইল হায়দার মল্লিক, সিইও নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন এবং অভিযুক্ত আকরাম খান ও নাইমুর রহমান দুর্জয় উপস্থিত ছিলেন। তবে বৈঠকে সাকিবের বক্তব্যের চেয়ে নিউজিল্যান্ডে জাতীয় দলের পারফরম্যান্স নিয়েই কথা হয়েছে বেশি।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, প্রথম ওয়ানডেতে তামিম বাহিনীর অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্স এবং দলের একাদশ সাজানো নিয়েই কথাবার্তা হয়েছে বেশি। এটা নিশ্চিত জাতীয় দলের কাছে এরই মধ্যে বিসিবি বিগ বসের বার্তা পৌঁছে গেছে।
রাতে বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলার পর খুব সম্ভবত কোচ, দলনেতা জালাল ইউনুস এবং সঙ্গে থাকা নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমনদের সঙ্গেও কথা বলবেন নাজমুল হাসান পাপন। যেখানে একাদশ নির্বাচন বিষয়ে একটি গাইডলাইন দেয়া হবে ঢাকা থেকে।
অন্যদিকে সাকিব ইস্যুকে সাকিবের ব্যক্তিগত কথোপকথন হিসেবেই ধরা হয়েছে বোর্ড পরিচালকদের বৈঠকে। তা নিয়ে বোর্ড প্রধান যে খুব বেশি প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, তেমন নয়। কাজেই সাকিবকে দোষী সাব্যস্ত করে বোর্ড সভাপতি প্রেস কনফারেন্স করবেন, তার বিরুদ্ধে কোড অফ কন্ডাক্ট ভঙ্গের অভিযোগ এনে তাকে শাস্তি দেয়ার যে গুঞ্জন- তার সত্যতাও মেলেনি।
বোঝাই যাচ্ছে, সাকিব ইস্যুতে বিসিবি ভেবেচিন্তে ও ভবিষ্যত ভেবেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবে। তবে তাকে ভেতরে ভেতরে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া এবং সতর্ক করে দেয়া হতে পারে। এর বাইরে বড় ধরনের কোন শাস্তি বা অন্য কিছুর সম্ভাবনা কম বলেই সূত্র জানিয়েছে।