ইউক্রেনে বাংলাদেশি জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধিতে গোলার আঘাতে প্রাণ হারানো থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ দেশে পৌঁছেছে। সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুর ১২টা ৬ মিনিটে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের (টিকে-৭২২) বিমানটি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
হাদিসুরের ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স ঢাকা মেইলকে মরদেহ পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ‘মরদেহ নিতে তিনি ছাড়াও আত্মীয়-স্বজনরা এসেছেন। সব প্রক্রিয়া শেষে লাশ নিয়ে তারা গ্রামের বাড়ির দিকে রওয়ানা হবেন। গ্রামে বাবা-মা আত্মীয়-স্বজন মরদেহের অপেক্ষায় আছেন। লাশ গ্রামে পৌঁছালে জানাজা শেষে দাফন করা হবে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, হাদিসুরের কফিনটি বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট দিয়ে বের করা হবে। এর আগে লাশ হস্তান্তরের যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করার পর স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
গতকাল দেশে পৌঁছার কথা ছিল নাবিক হাদিসুরের মরদেহ। কিন্তু তুরস্কে প্রবল তুষারপাতের কারণে ফ্লাইটটির যাত্রা বাতিল করায় মরদেহ দেশে পৌঁছতে এক দিন বিলম্ব হয়। বিকল্প একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে আজ কফিনবন্দি হয়ে দেশে ফেরেন তরুণ প্রকৌশলী হাদিসুর।
এর আগে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি কার্গো বিমানে রোববার রোমানিয়া থেকে তুরস্কে পৌঁছে হাদিসুরের লাশ। গত ২ মার্চ ইউক্রেন উপকূলে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে রকেট হামলা হয়। এতে জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুরের মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ডেনিশ কোম্পানি ডেল্টা করপোরেশনের অধীনে ভাড়ায় চলছিল। মুম্বাই থেকে তুরস্ক হয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি জাহাজটি ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে নোঙর করে। ওলভিয়া থেকে সিমেন্ট ক্লে নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল জাহাজটির।
কিন্তু ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হলে ২৯ জন নাবিক ও ক্রু নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে বন্দরে আটকা পড়ে জাহাজটি। ২ মার্চ একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে জাহাজটিতে। গোলার আঘাতে প্রাণ হারান প্রকৌশলী হাদিসুর। অল্পে রক্ষা পান বাকিরা।
ঘটনার পরদিন জীবিত ২৮ নাবিককে উদ্ধার করে ইউক্রেনের একটি বাঙ্কারে নেওয়া হয়। পরে জীবিত নাবিকদের নিরাপদে রোমানিয়ায় নেওয়া হলেও হাদিসুরের মরদেহ ইউক্রেনের একটি বাঙ্কারে ‘ফ্রিজআপ’ করে রাখা হয়।
ইউক্রেন থেকে মলদোভা ও রোমানিয়া হয়ে ৯ মার্চ দুপুরে দেশে ফেরেন এই ২৮ নাবিক।