দেশের একমাত্র প্রবাল সমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিনের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রণয়ন করা হচ্ছে নীতিমালা। ইতিমধ্যে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) এবং পরিবেশ অধিদপ্তর সেন্টমার্টিনে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সেখানে অভিযান চালিয়ে কয়েকটি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও জরিমানা আদায় করা হয়। এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ-প্রতিবেশ বিরল জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা এবং টেকসই পর্যটন উন্নয়নে প্রণীত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন’ সংক্রান্ত এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকেই সেন্টমার্টিনে অবকাঠামো নির্মাণ বা সম্প্রসারণের পূর্বে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়।
সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দ্রুত কাজ করার কথা জানিয়ে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইক্যুলোজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়া (ইসিএ)। এ দ্বীপকে পরিকল্পিতভাবে সাজানো না গেলে সেন্টমার্টিন দ্বীপটি মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাওবার আশঙ্কা রয়েছে। তাই এখনই সেন্টমার্টিনে সব প্রকার অবকাঠামো নির্মাণ সম্প্রসারণ বন্ধ করা প্রয়োজন। বর্তমানে অনুমোদনহীন অনেকগুলো পাকা, আধা-পাকা, কাঁচা দালান নির্মাণাধীন রয়েছে। আমি মনে করি এটি নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত এক সভায় আমি বিষয়টি তুলে ধরেছি। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কউকের অনুমতি ব্যতিরেকে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না।
‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ-প্রতিবেশ বিরল জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা এবং টেকসই পর্যটন উন্নয়নে প্রণীত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন’ শীর্ষক অনুষ্ঠিত ঐ সভায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সেন্টমার্টিনের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ইকোট্যুরিজম উন্নয়ন করা প্রয়োজন। বর্তমানে যত্রতত্র হোটেল-মোটেল গড়ে ওঠায় পরিবেশ ও প্রতিবেশ হুমকির মুখে রয়েছে। তাই সেন্টমার্টিনে পর্যটন সংখ্যা সীমিত করে ব্যবস্থাপনার দিকেই বেশি জোর দিতে হবে।
কক্সবাজার রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রাসেল চৌধুরী বলেন, হেলায় অনেক বেলা নষ্ট হয়েছে। প্রবাল দ্বীপটি এখন হুমকির মুখে। আরো বেশি ক্ষতি হওয়ার পূর্বে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মনে হয় দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে কোনো অভিভাবক নেই। ফলে যে যার মতো স্থাপনা নির্মাণ করেছে। এভাবে চলতে থাকলে সেন্টমার্টিন দ্বীপটি আমাদের কাছে অতীত হয়ে যাবে। তাই আর সময় নষ্ট না করে সেন্টমার্টিন রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।