শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ, পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতাসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে স্বাধীনতা মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্য পরিষদ। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে দাবিগুলো তুলে ধরে সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের রোল মডেল। বিশ্ব যখন অর্থনৈতিক মন্দার জন্য বিপদগ্রস্ত তখন বাংলাদেশ অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে।
উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে বিশ্বমানের শিক্ষা প্রবর্তন অপরিহার্য জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষা প্রবর্তনের বাধা সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য। বাংলাদেশে প্রায় ৯৮ ভাগ শিক্ষা পরিচালিত হয় বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। মাত্র ২ ভাগ সরকারি খাতে পরিচালিত হয়। এছাড়া রয়েছে সরকার-বেসরকারি বেতন ভাতার বৈষম্য।
সমস্যা সমাধানের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করা হলে শুধু শিক্ষক-কর্মচারীরাই লাভবান হবে তা নয় এতে দেশের মানুষ-এর সুবিধা পাবে। স্বল্প আয়ে ছেলে-মেয়েদের পড়া লেখা করাতে পারবে। এতে সরকারেরও সমর্থন বৃদ্ধি পাবে।
লিখিত বক্তব্যে দাবিগুলো তুলে ধরেন স্বাধীনতা মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম।
দাবিগুলো হলো-
১. মুজিববর্ষেই শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের ঘোষণা দিতে হবে।
২. আসন্ন ঈদের পূর্বেই পূর্নাঙ্গ উৎসব ভাতা প্রদান করতে হবে এবং বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা সরকাার শিক্ষক কর্মচারীদের সমপরিমাণ করতে হবে।
৩. প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো ইবতেদায়ী মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের শতভাগ উপবৃত্তি প্রদান করতে হবে।
৪. ডাটা এন্ট্রিকৃত ৭৪৫৩টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা, এবং স্বীকৃতিপ্রাপ্ত দাখিল, আলিম, ফাযিল পর্যায়ের মাদরাসা সমূহকে এমপিওভুক্ত করতে হবে।
৫. ইবতেদায়ী সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১৬ এর পরিবর্তে ১৩ গ্রেড প্রদান করতে হবে।
৬. জনবল কাঠামো ২০১৮ মোতাবেক মাদরাসা শিক্ষকদের ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে।
৭. মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও ইসলামিক আরবী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীদের প্রত্যাহার করে স্বাধীনতার পক্ষের শিক্ষকদের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
৮. ১২ বছর ও ১৬ বছর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্রভাষকদের উপাধ্যক্ষ ও অধ্যক্ষ পদে আবেদনের সুযোগ প্রদান করতে হবে।
৯. অবিলম্বে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ বাস্তবায়ন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৯ দফা দাবি পূরণের লক্ষ্যে রক্ত ঝরা মার্চের ৩০ তারিখ বুধবার ঢাকায় স্বাধীনতা মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশ শেষে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন— স্বাধীনতা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি এস এম জয়নুল আবেদীন, সাধারণ সম্পাদক মো. তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি কাজী ফয়জুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মূখলেছুর রহমান, অধ্যক্ষ গোলাম মাওলাসহ ঐক্যজোটভুক্ত সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।