রাশিয়া ভুয়া খবর ছড়ানোর বিষয়ে নতুন আইন করেছে । এই আইনের প্রতিবাদ করে রাশিয়ায় কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করেছে সিএনএন, বিবিসি, ব্লুমবার্গ, সিবিসিসহ একাধিক পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম। রাশিয়ান পার্লামেন্ট একটি প্রস্তাবিত আইন অনুমোদন করার পরে এই সিদ্ধান্ত আসে। ওই আইনে বলা হয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুয়া খবর ছড়ালে এবং দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এর একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘পরিস্থিতি এবং আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ মূল্যায়ন করার জন্য সিএনএন রাশিয়ায় সম্প্রচার বন্ধ করবে।’ কানাডিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (সিবিসি) এবং রেডিও-কানাডা বলেছে যে, তারা রাশিয়ায় তাদের রিপোর্টিং সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে।
অনলাইনে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সিবিসি/রেডিও-কানাডা রাশিয়ায় পাস করা নতুন আইন সম্পর্কে খুব উদ্বিগ্ন, যা ইউক্রেন এবং রাশিয়ার বর্তমান পরিস্থিতির উপর স্বাধীন রিপোর্টিংকে অপারাধ হিসেবে শনাক্ত করবে।’
ব্লুমবার্গ নিউজ জানিয়েছে, রাশিয়ার অভ্যন্তরে তার সাংবাদিকদের কাজ সাময়িকভাবে স্থগিত করছে।
ব্লুমবার্গ এডিটর-ইন-চিফ জন মিকলেথওয়েট এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ফৌজদারি কোডের পরিবর্তন (যা যেকোনো স্বাধীন রিপোর্টারকে সম্পূর্ণভাবে অপরাধীতে পরিণত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে) দেশের অভ্যন্তরে সাধারণ সাংবাদিকতাকে অসম্ভব করে তুলবে।’
একই কারণে রাশিয়ায় কার্যক্রম স্থগিত করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সংবাদমাধ্যমটির মহাপরিচালক টিম ডেভি উল্লেখ করেছেন যে, নতুন আইনটি নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার পদ্ধতিকে অপরাধী করার জন্যই আনা হয়েছে।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, এই অনাকাঙ্খিত আইনের প্রভার মূল্যায়ন করার জন্য রাশিয়ান ফেডারেশনে কর্মরত আমাদের সব সাংবাদিক ও তাদের সহায়তা কর্মীদের কাজ সাময়িক স্থগিত করছি। এটি করা ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প নেই।
তিনি যোগ করেছেন যে, রাশিয়ান ভাষায় বিবিসি নিউজ সার্ভিস রাশিয়ার বাইরে থেকে কাজ করবে।
বিবিসি নিউজের অন্তর্বর্তীকালীন পরিচালক জোনাথন মুনরো উল্লেখ করেছেন যে, কোম্পানিটি মস্কো থেকে সাংবাদিকদের সরিয়ে নিচ্ছে না। তারা নতুন আইনটির প্রভাব মূল্যায়ন করছে।
পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের এসব সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ক্রেমলিন।
অপরদিকে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ও বার্তা সংস্থার কার্যক্রম সীমিত করার জন্য ফেসবুক ও টুইটারকে নিষিদ্ধ করেছে রাশিয়া। রাশিয়ার যোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা একথা জানিয়েছে।
সংস্থার প্রধান রোসকোমনাডজোর শুক্রবার বলেন, ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ফেসবুক রাশিয়ান মিডিয়ার বিরুদ্ধে ২৬টি বৈষম্যের ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা আরটি এবং আরআইএ এর মতো রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করে দিয়েছিল।