জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্যের পদ থেকে বুধবার দুপুরে বিদায় নিলেন অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। বিদায়ের পরেই বিকালে ঝাড়ু, কাঁঠাল প্রদর্শন করে আনন্দ মিছিল করেছে একদল শিক্ষার্থী। তবে শিক্ষার্থীদের মিছিলটি ভিসির বাসায় সামনে যাওয়ার পথে বাঁধা দেন ফারজানার অনুসারী আওয়ামী ও বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা। সেখানে শিক্ষকদের সঙ্গে মিছিলকারী শিক্ষার্থীদের ব্যাপক বাকযুদ্ধ হয়। পরে শিক্ষার্থীরা মিছিলটি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে দিয়েই বের হয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে মিছিলের সমাপ্তি করে। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা কেউ কেউ মিছিলটিকে আনন্দ মিছিল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে ‘দুর্নীতিবাজ’ আখ্যা দিয়ে তার বিচার দাবিতে বুধবার বিকাল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌরঙ্গী সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের দিকে এগিয়ে আসলে শিক্ষকরা বাঁধা প্রদান করেন। এ সময় শিক্ষকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নূরুল আলমকে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে উপাচার্যের পদ থেকে অবসর নেন ফারজানা ইসলাম। একই সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর অধ্যাপক নূরুল আলম উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
জানা যায়, জাবির চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের দুর্নীতির ঘটনায় বেশি আলোচিত হন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। এমনকি এ ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগ দিয়ে হামলা করিয়ে সেটিকে গণঅভ্যুত্থান আখ্যা দেওয়ায় ব্যাপক সমালোচিত হন তিনি। এছাড়া ২০১৭ সালে একটি ঘটনায় আন্দোলনকারী ৬৪ শিক্ষার্থীর নামে মামলা করেন তিনি। এই আন্দোলনে ভিসি কাঁঠাল তত্ত্বের উদ্ভব ঘটান। তিনি অভিযোগ করেন- শিক্ষার্থীরা তার বাসভবনে কাঁঠাল ছুড়েছিল।
এসব ঘটনায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ফারজানা ইসলামের বিদায়ে ঝাড়ু ও কাঁঠাল নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা ফারজানার বিচার দাবি করেন। সেখানে বক্তব্য দেন ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি রাকিবুল হক রনি, ছাত্রফ্রন্টের জাবি সভাপতি আবু সাঈদ প্রমুখ। এর আগে, ২০১৪ সালে অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম প্রথম মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব পান। প্রথম মেয়াদ শেষ হলে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আবারো তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। একই বছর ২ মার্চ তিনি দ্বিতীয় মেয়াদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।