রাশিয়ার সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়েছে ইউক্রেনের। সাধারণ মানুষকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এরই মধ্যে বিদেশ থেকে অন্তত ৮০ হাজার ইউক্রেনীয় যুদ্ধ করতে দেশে ফিরেছেন বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
একটি টেলিগ্রাম পোস্টে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রত্যাবর্তনকারীদের বেশিরভাগই পুরুষ এবং তারা সামরিক পদে এবং অন্যান্য আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা বাহিনীতে যোগদান করেছেন। খবর আল জাজিরার
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার সপ্তম দিন চলছে। দুই পক্ষের মধ্যে বিভিন্ন শহরে তীব্র লড়াই হচ্ছে। ইউক্রেনের কয়েকটি শহর রাশিয়ার দখলে গেলেও রাজধানী কিয়েভ এখনো দখলে নেয়া সম্ভব হয়নি।
মঙ্গলবার বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে রুশ হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে ফোনালাপ করেন জেলেনস্কি। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, বাইডেন এবং জেলেনস্কি আলোচনা করেছেন যে কীভাবে রাশিয়া বেসামরিকদের ওপর আক্রমণ তীব্র করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন ভাষণে ইউক্রেনের বিষয়ে পশ্চিমা ঐক্যের কথা তুলে ধরেন। ভাষণে বাইডেন বলেন, ‘আমাদের ইতিহাস থেকে শিখেছি – যখন স্বৈরশাসকদের তাদের আগ্রাসনের জন্য জবাবদিহি করতে হয় না, তখন তারা আরও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।’
ইউক্রেনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং সামরিক স্থাপনায় হামলা তীব্রতর হবে জানিয়েছিল রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। দেশটির নাগরিকদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যেতে আহ্বান জানিয়েছে মস্কো।
এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ পেতে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছেন জেলেনস্কি। মঙ্গলবার ইইউ পার্লামেন্টের অধিবেশনে ভিডিও বক্তব্যও প্রদান করেন তিনি।
আবেগী সেই বক্তব্যে জেলেনস্কি বলেছেন, আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকার প্রমাণ দিন। প্রমাণ করুন যে আপনারা আমাদের যেতে দেবেন না। প্রমাণ করুন যে আপনারা প্রকৃতপক্ষে ইউরোপীয় এবং তারপর জীবন মৃত্যুর উপর জয়ী হবে এবং আলো অন্ধকারের উপর জয়ী হবে।
এ দিন জেলেনস্কিকে সম্মান জানাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টের সদস্যদের অনেকেই ইউক্রেনের পতাকা সম্বলিত #standwithUkraine টি-শার্ট ও নীল-হলুদ স্কার্ফ বা ফিতা পরেছিলেন।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে নিলে ইইউ অনেক শক্তাশালী হবে। কিন্তু আপনাদের ছাড়া ইউক্রেন একা হয়ে যাবে।‘
ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনপ্রণেতারা রাশিয়াকে একটি “দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র” বলে অভিহিত এবং ২৭ দেশের ব্লককে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সম্মত হওয়ার আহ্বান জানাতে পারেন।
গত সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধ শুরু করার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহের অর্থায়নসহ অভূতপূর্ব পদক্ষেপ নিয়েছে।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইউক্রেনে এ পর্যন্ত ১৩ শিশুসহ অন্তত ১৩৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ২৬ শিশুসহ ৪০০ জন আহত হয়েছে। এছাড়া অন্তত ৬ লাখ ৬০ হাজার ইউক্রেনীয় প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।