একাত্তরের রণাঙ্গনে বিপুল বিক্রমে লড়েছেন বাংলার নারীরা। অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। অনেকেই শহীদ হয়েছেন। অনেকে হয়েছেন নির্যাতনের শিকার। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে সেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ৬৫৪ জনকে সম্মাননা দিয়েছে সরকার।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ৬৫ জন এবং বাকি নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাকে দেশের বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সম্মাননা দেওয়া হয়। তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সম্মাননা স্মারক, উত্তরীয়, শাড়ি ও স্মরণিকা। মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
অনুষ্ঠানে সব বীরাঙ্গনা বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ‘বীর নিবাস’ নির্মাণ করে দেওয়া হবে বলে জানান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যেসব স্থানে যুদ্ধ হয়েছিল, সেসব স্থান আমরা সংরক্ষণ করছি। বধ্যভূমিগুলোও আমরা সংরক্ষণ করছি। এ ছাড়া যদি কোনো মুক্তিযোদ্ধা মারা যান, তাদের একই রকম ডিজাইনের কবর দেওয়া হবে, যেন ৫০ বছর পরও একটি কবর দেখে বোঝা যায়, এটি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর।
সভাপতির বক্তব্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে ও জাতীয় পর্যায়ে একসঙ্গে দেশব্যাপী এত নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাকে আনুষ্ঠানিক সম্মাননা দেওয়া হয়নি। মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দেওয়ার এ ঘটনা ঐতিহাসিক হিসেবে ইতিহাসে লিপিবদ্ধ থাকবে।
সম্মাননা অনুষ্ঠানে মুজিববর্ষের থিম সং এবং নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গৌরবময় ও সংগ্রামী জীবনের ওপর নির্মিত গীতি আলেখ্য পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানে সম্মাননাপ্রাপ্ত নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাকদুমা নার্গিস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদা খানম সাকী। গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া শিরিন অনুভূতি প্রকাশ করেন। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার অনুষ্ঠানস্থলে এবং জেলা প্রশাসকরা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।