ফেনীর দুই অভিবাসী যুবক পৃথকভাবে অবৈধ পথে তুরস্ক থেকে গ্রীস যাওয়ার পথে তীব্র তুষারপাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছে আরও এক যুবক। নিহত যুবকের নাম নজরুল ইসলাম শাহীনের (২৮) ও নিখোঁজ যুবক সুমন (২৬)। নিহত ও নিখোঁজের স্বজনরা গণমাধ্যমে এমন তথ্য জানিয়েছেন। নিহত নজরুল ইসলাম শাহীন ফেনী পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ড বারাহীপুর এলাকার আবদুর রৌপ মাস্টার বাড়ির মিজানুর রহমানের ছেলে। নিখোঁজ সুমন ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের চর শাহভিকারী এলাকার বাসিন্দা।
নিহতের শাহীনের মামাতো ভাই নাসির উদ্দিন মানিক জানান, শাহীন ফেনীর শহীদ মেজর সালাহ উদ্দিন মমতাজ বীর উত্তম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে এসএসসি পাস করেন। দুই বছর আগে ২০১৯ জীবিকার তাগিদে দেশ ছেড়ে ওমান যায় শাহীন। সেখানে দু’বছর অবস্থান করে শাহীন তুরস্ক চলে যায়। সেখানে কিছুদিন থেকে তুর্কী সীমান্তের ইস্তাম্বুল হয়ে গ্রীসে যাওয়ার চেষ্টা করে শাহীন। গত ২রা ফেব্রুয়ারি গ্রীস যাওয়ার পথে প্রবল তুষার ঝড়ের কবলে পড়েন শাহীনসহ তার সহযাত্রীরা।
এর পর থেকে তার আর কোন খোঁজ পাচ্ছিল না স্বজনরা। নিহত শাহীনের বাবা মিজানুর রহমান বলেন, গত দু’সপ্তাহ ছেলের কোন খোঁজ খবর না পেলে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেলের ছবি ও মুঠোফোন নম্বর দিয়ে সন্ধান চাওয়া হয়। মঙ্গলবার তুরস্ক থেকে মশিউর রাব্বী নামে এক প্রবাসী শাহীনের মরদেহের ছবি দেখে ও পরিবারের সাথে কথা বলে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। নিহত শাহীনের মরদেহ ইস্তাম্বুলের একটি হাসপাতালের হিম ঘরে রয়েছে বলেও তিনি জানান।
বাবা মিজানুর রহমান আরও বলেন, তার ছেলে মরদেহ দেশে আনতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও দূতাবাসের সহযোগীতা কামনা করেছেন। ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপনর মিয়াজী জানান, তার পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম শাহীন তুরস্কে তুষারপাতে নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয়ভাবে জানতে পেরেছেন। মরদেহ দেশে আনতে নিহতের পরিবার যদি পৌরসভার কোন সহযোগীতা চায় তাহলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সহায়তা করার চেষ্টা করা হবে।
এদিকে গ্রীস যাওয়ার পথে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার বাসিন্দা সুমন নামে এক যুবক মঙ্গলবার পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন। সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের চর শাহভিকারী এলাকার বাসিন্দা সুমন গত ৩১ জানুয়ারি তুর্কির ইস্তাম্বুল থেকে গ্রীস যাওয়ার জন্য বের হয়েছিল। এর পর থেকে পরিবারের সাথে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সেখানে অবস্থানরত কেউ তার সন্ধান পেয়ে থাকলে জানানোর জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। যোগাযোগেন নাম্বার +৮৮০১৮৮৯২৪৫৩৩৩ (বাংলাদেশ) ও +৩০৬৯৪১৬১১০৬৯ (হোয়াটসঅ্যাপ)।