হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার রূপাইছড়ায় চলছে অবাধে পাহাড় কাটা। এতে পার্শ্ববর্তী এলাকার পরিবেশ বিপন্ন হওয়া ছাড়াও সরকারি রাবার বাগানটি পড়েছে অস্তিত্ব সংকটে। অভিযোগে প্রকাশ, এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন যাবৎ গাছপালাসহ পাহাড় কেটে মাটি ও বালু উত্তোলন করে উঁচু পাহাড়কে সমতল ভূমিতে পরিণত করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাদের অবৈধ কাজে কোনো বাধা না আসায় তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ কাজে চক্রটির পৃষ্ঠপোষকতা করছে ক্ষমতাসীন দলের স্হানীয় এক ক্ষমতাধর নেতা।
জানা যায়, ১৯৭৭ সালে রূপাইছড়া পাহাড়ি এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে রাবার চাষ সফল হওয়ায় ১ হাজার ৯৬২ একর ভূমিতে সরকারিভাবে রূপাইছড়া রাবার বাগান প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে বাগানে আড়াই লক্ষাধিক রাবার গাছের চারা রোপণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে রাবার কষ (লেটেক্স) উত্পাদনের ক্ষেত্রে এ বাগান সুনাম অর্জন করে। কিন্তু কালক্রমে অব্যবস্হাপনা, দুর্নীতি ও দক্ষ শ্রমিকের অভাবসহ বিভিন্ন কারণে বাগানটি তার স্বাভাবিক রূপবৈচিত্র্য হারিয়ে ফেলে। এই সুযোগে স্হানীয় এক শ্রেণির ভূমিখেকো চক্র রাবার বাগানের অরক্ষিত বিস্তীর্ণ পাহাড়িয়া ভূমির মাটি, বালু, গাছ, রাবার চুরি শুরু করে। প্রকাশ্য দিবালোকে এমনকি রাতেও সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে পাহাড় কাটা অব্যাহত থাকে। অভিযোগ রয়েছে ভুয়া দলিল সৃষ্টি করে অনেকেই রাবার বাগানের সরকারি ভূমি দখল করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। অবৈধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত প্রভাবশালী চক্রের ভয়ে নিরীহ এলাকাবাসী কিংবা রাবার বাগানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ নীরব ভূমিকা পালন করতে বাধ্য হন।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব বিজেন ব্যানার্জী জানান, বেআইনিভাবে পাহাড় কাটা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ব্যাপারে সরেজমিন তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্হা নেওয়া হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর হবিগঞ্জের উপপরিচালক মিজানুর রহমান জানান, বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত অবগত হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, দীর্ঘদিন যাবত্ বাহুবলের রূপাইছড়ায় পাহাড় ও বনভূমি ধ্বংস করা হচ্ছে। যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্রে্যর ওপর। এই অবৈধ কাজ বন্ধ করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি প্রয়োজন।