টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে অবৈধ বালুর ঘাট দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন ১০ জন। বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের বাগানবাড়ি এলাকায় নিকরাইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হক মাসুদ মাসুদুল হক মাসুদ ও একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মতিন সরকারের লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
আহতদের মধ্যে ছয়জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- নিকরাইল ইউনিয়নের পূর্নবাসন এলাকার হযরত আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম (৩৯), পলশিয়া এলাকার আব্দুল কাদেরের ছেলে শাহআলম (৩০), আমজাদ হোসেনের ছেলে শফিকুল (৩৫), হোসেন আলী (৫৫), আব্দুল লতিফের ছেলে সবুজ (১৮) ও ইয়াসিনের ছেলে ইয়ামিন (৩৮)।
জানা গেছে, উপজেলার নিকরাইলে প্রায় ২০টি অবৈধ বালুর ঘাট রয়েছে। এসব ঘাটের বালু ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়। শুষ্ক মৌসুমে যমুনা নদীর শুকিয়ে চর জেগে উঠলে শুরু হয় নদীর পাড় কেটে বিক্রি। বুধবার দুপুরে নিকরাইল ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাসুদুল হক মাসুদ এবং সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন সরকারের লোকজনের মধ্যে বালুর ঘাটের রাস্তা নির্মাণ ও দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বেধে যায়। দফায় দফায় চলা সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে সাত রাউন্ড টিয়ার শেল ছুড়ে দু’পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে দু’পক্ষের ১০ জন আহত হন।
এদিকে বালুর ঘাটে সংঘর্ষের কারণে ঘাটে বালু নিতে যাওয়া শত শত ট্রাক বঙ্গবন্ধু সেতু-ভূঞাপুর সড়কে দাঁড়িয়ে থাকলে যানজটের সৃষ্টি হয়। নিকরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন সরকার বলেন, চেয়ারম্যান মাসুদুল হক মাসুদ ও নুহু মেম্বারের লোকজন বালুর ঘাট দখল করে মাটি তোলার যন্ত্র (ভেকু) ও ক্যাশ কাউন্টার ভাঙচুর করে লুটপাট করেন। এসময় তারা ককটেল ও গুলি ছোড়েন। এতে ঘাটে থাকা আটজন আহত হয়েছেন।
নিকরাইল ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাসুদুল হক মাসুদ জানান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির লোকজন অন্যদের জমি দখল করে ঘাট তৈরি করছিলেন। এসময় তারা বাঁধা দিতে গেলে তাদের ওপর আক্রমণ করা হয়। এতে ১০ জন আহত হয়েছেন। ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল ওহাব বাংলানিউজকে জানান, বালুর ঘাট দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে সাবেক ও নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল ছোড়ে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাত রাউন্ড টিয়ার শেল ছোড়ে পুলিশ। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাই ফের সংঘর্ষ এড়াতে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।