মডেল মুশফিকা তিনার বাবা ও চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খানের (৫৮) মরদেহ যেখানে ছিল, তার পাশে বেশ কিছু নোট পেয়েছে পুলিশ। সেগুলো আলামত হিসেবে সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই নোটগুলোর মধ্যে ছিল একটি সুইসাইড নোটও। তাতে লেখা রয়েছে- ‘ব্যবসায় ধস নেমে যাওয়ায় আমি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ি। আমার সঙ্গে অনেকের লেনদেন ছিল। কিন্তু তারা টাকা দেয়নি। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। ’বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. সাজ্জাদুর রহমান এসব তথ্য জানান।
যে পিস্তল দিয়ে আবু মহসিন নিজের মাথায় গুলি চালিয়েছেন, সেটি তার নামে লাইসেন্স করা। টেবিলের ওপর ওই পিস্তলের লাইসেন্স কপি রাখা ছিল। বিষয়টি উল্লেখ করে ডিসি সাজ্জাদুর রহমান বলেন, আবু মহসিনের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে ও ঘটনাস্থলে পাওয়া নোট পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে, প্রায় ৫ বছরের মত তিনি একা ছিলেন। ২০১৭ সালে তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। অসুস্থ হওয়ার পর ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে তার দেনা-পাওনা ছিল। দেনাদাররা টাকা না দিয়ে তার বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা করেছেন। এসব কারণে তিনি খুব হতাশ ছিলেন। তবে পরিবারের সব সদস্যের সঙ্গে এখনও আমাদের কথা বলার সুযোগ হয়নি।
এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আবু মহসিনের স্ত্রী ও ছেলে অস্ট্রেলিয়াতে থাকেন। মেয়ে তিনা থাকেন বনানীতে। মরদেহ উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফ্ল্যাটের দরজা ভাঙতে হয়নি। ভেতরে ঢুকতেই দেখা যায় ড্রইং রুমে একটি টেবিল আছে। তিনি একটি চেয়ারে বসে ছিলেন। মোবাইলে লাইভে ছিল। তার মাথার ডান পাশে গুলি লেগেছে।
ঘটনার সময় ওই ফ্ল্যাটে অন্য কেউ ছিলেন কিনা জানতে চাইলে ডিসি বলেন, ঘটনার সময় বাসায় কেউ ছিলেন না। ফ্ল্যাটের দরজা খোলা ছিল। আমরা তদন্ত করে দেখেছি। বাড়ির প্রতিটি জায়গাতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো আছে। এখন পর্যন্ত বাইরের কোনো ব্যক্তির গতিবিধি লক্ষ্য করা যায়নি। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আবু মহসিনের পরিবারের পক্ষ থেকে যে মামলা দেবে আমরা গ্রহণ করবো। এখন বিষয়টি তার পরিবারের বিবেচনার বিষয়। পুলিশের পক্ষ থেকে আমরা আইনগত সহযোগিতা করবো। বুধবার (০২ ফ্রেরুয়ারি) রাত পৌনে ৯টার দিকে ধানমণ্ডির ৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর বাড়ির ফ্ল্যাট থেকে আবু মহসিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি ফেসবুক লাইভে এসে নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন।