রাজধানীর মহাখালীর একটি হাসপাতাল থেকে গুরুতর অসুস্থ মেয়ে আফসানা আক্তারকে (৯) গাইবান্ধা যাচ্ছিলেন আলম মিয়া। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স ও এক মাইক্রোবাস চালকের দ্বন্দ্বে সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইলে পথেই নামে মারা যায় আফসানা। এ ঘটনায় মামলার পর দুই মাইক্রোবাস চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম।
এর আগে, মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সেই মৃত্যু হয় শিশু আফসানার। পরে নিহতের বাবা আলম মিয়া ৭ জনের নামে মামলা করলে রাতেই দুই চালককে আটক করা হয়। নিহত আফসানা আক্তার গাইবান্ধার বদ্ধ ধান গড়া গ্রামের আলমের মেয়ে। সে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত।
গ্রেফতাররা হলেন- টাঙ্গাইল জেলার ভুয়াপুর উপজেলার দোপাকান্দী গ্রামের আব্দুর রহমান খানের ছেলে হানিফ খান (৪০)। তিনি আশুলিয়ার বাইপাইলে বসবাস করেন ও একটি রেন্ট-এ কারের চালক। আরেকজন টাঙ্গাইলের ভুয়াপুরের খুপিবাড়ি গ্রামের মৃত সুরুজ মন্ডলের ছেলে মো. ইমরান (২৫), পেশায় গাড়ি চালক। এছাড়া এ মামলার প্রধান আসামি মাইক্রোবাসের চালক নজরুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।
শিশুটির বাবা আলম মিয়া বলেন, আমার মেয়ে ক্যন্সারে আক্রান্ত ছিল। চার মাস হয়েছে ক্যান্সার ধরা পরেছে। আমি মঙ্গলবার সকালে মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে মেয়েকে নিলে ডাক্তারা বলেন রোগীর অবস্থা তেমন ভালো না, তাকে বাড়িতে নিয়ে যান। আত্মীয়-স্বজন সাবাইকে দেখান। তখন আমি হাসপাতালে দেরি না করে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করি বাড়ি যাওয়ার জন্য। পথে আশুলিয়ায় একটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে আমাদের অ্যাম্বুলেন্সের ঝামেলা হয়। পরে বাইপাইলে অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছালে চাবি নিয়ে যায় সেই মাইক্রোবাসের চালক। আমি কয়েকবার চাবি চাইলেও তারা দেয়নি। এর মধ্যে আমার মেয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যায়।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, নিহতের মরদেহ মঙ্গলবারই ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলার পর মঙ্গলবার দিবাগত রাতেই আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত চালক ইমরান হোসেন ও হানিফ খানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) আদালতে পাঠানো হবে। ঘটনায় জড়িত সবার পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।