প্রথম দুই সেটে হেরে গিয়েছিলেন রাফায়েল নাদাল। শ্বাসরূদ্ধকর লড়াই এরপরই জমে ওঠে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে। দৃঢ় সংকল্প নিয়ে মাঠে নামার পর রাফায়েল নাদাল যেন ফিরে গেলেন তার সোনালী অতীতে।
প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টার লড়াইয়ে (৫ ঘণ্টা ২৪ মিনিট) ২-০ তে পিছিয়ে পড়ার পরও টানা তিন সেট জিতে অবশেষে টেনিসের ইতিহাসে অনন্য নজির স্থাপন করে ফেললেন স্প্যানিশ তারকা নাদাল।
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে রাশিয়ান তারকা ড্যানিল মেদভেদেভকে ২-৬, ৬(৫)-৭(৭), ৬-৪, ৬-৪ এবং ৭-৫ সেটে হারিয়ে প্রথম টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে ২১তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে নিলেন রাফায়েল নাদাল।
টেনিসের ইতিহাসে সর্বাধিক ২০টি করে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয় করে শীর্ষে বসেছিলেন তিনজন। সুইস তারকা রজার ফেদেরার, স্প্যানিশ তারকা রাফায়েল নাদাল এবং সার্ব তারকা নোভাক জকোভিচ। এবার ফেদেরার-জকোভিচ এই দুজনকে পেছনে ফেলে প্রথম টেনিস তারকা হিসেবে ২১টি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের রেকর্ড গড়লেন নাদাল।
মেলবোর্নের রড লেভার এরেনায় বিশ্বের দুই নম্বর বাছাই ড্যানিল মেদভেদেভ এবং ৬ষ্ঠ বাছাই রাফায়েল নাদালের মধ্যকার শিরোপা লড়াইটা তুমুলভাবে জমে উঠেছিল। বিস্ময়কর হলেও সত্য, ৫ ঘণ্টা ২৪ মিনিটের লড়াই শেষে বিজয়ীর খাতায় নাম তোলেন নাদাল।
বিশ্বের এক নম্বর তারকা নোভাক জকোভিচ অবশ্য অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের রাজা। আগেরবারের চ্যাম্পিয়নও ছিলেন তিনি। এই মেদভেদেভকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন জোকার। কিন্তু এবার করোনা টিকা নিয়ে ঝামেলার কারণে মেলবোর্ন গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে জকোভিচকে। তার বিষয়টি আদালতে গড়ালেও শেষ পর্যন্ত ফিরে আসেন তিনি এবং খেলা হয়নি এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন।
জকোভিচ খেলতে পারলে হয়তো সবার আগে, প্রথম ২১তম গ্র্যান্ড স্লামের মালিক হয়ে যেতেন তিনিই। কিন্তু জকোভিচ না থাকায়, এই সুযোগটা নিয়ে নিলেন রাফায়েল নাদাল। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতলেন নাদাল। এরআগে সর্বশেষ ২০০৯ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছিলেন তিনি।
৫ ঘণ্টা ২৪ মিনিটের ম্যারাথন ম্যাচের পর পরাজিত সৈনিক হিসেবেই মাঠ ত্যাড় করেন মেদভেদেভ। তবে তিনি নাদালকে ধন্যবাদ জানাতে ভুললেন না। তিনি বলেন, ‘আমি অবশ্যই রাফাকে (নাদাল) অভিনন্দন জানাতে চাই। তিনি আজ যা করেছেন, সত্যিই আমি অভিভূত। ম্যাচ শেষে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলা, তুমি কী ক্লান্ত? অভিনন্দন। অবিশ্বাস্য ম্যাচ জিতেছ এবং তোমার দলকেও অভিনন্দন।’
নিজে চ্যাম্পিয়ন হলেও প্রতিপক্ষ মেদভেদেভকে কৃতিত্ব দিতে ভুললেন না নাদাল। বরং, তার চোখে যেন চ্যাম্পিয়ন মেদভেদেভই। নাদাল বলেন, ‘শুভ সন্ধ্যা নাকি শুভ সকাল বলবো? ড্যানিল (মেদভেদেভ) তুমি সত্যিই অসাধারণ। তুমিই চ্যাম্পিয়ন। আমার কোনো সন্দেহ নেই, ক্যারিয়ারে কোনো না কোনো এক সময় এই ট্রফি তোমার হাতে উঠবেই। তোমাকে এবং তোমার দলকে অভিনন্দন। এটা আমার টেনিস ক্যারিয়ারে অন্যতম একটি আবেগের ম্যাচ। অবশ্যই ভবিষ্যতের জন্য তোমার প্রতি শুভ কামনা থাকলো।’