শতাব্দির শুরুর দিকে শ্রেষ্ঠত্বের তর্কে শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গে দারুণভাবেই উচ্চারিত হতো ব্রায়ান লারার নাম। দু’জনের দ্বৈরথটাও ছিল দুর্দান্ত। রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজ যেন সে সময়টাই ফিরিয়ে আনল। শচীন অর্ধশতক পেলেন, দলকে এনে দিলেন বড় পুঁজি। এরপর ব্যাট হাতে লারাও ঝড় তুললেন, তাতে ভর করে বড় লক্ষ্যটা প্রায় তাড়াও করে ফেলেছিল তার দল।
শেষ রক্ষা হয়নি অবশ্য। লক্ষ্য থেকে ১২ রান দূরে থেমেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ লেজেন্ডস। তাতে ইন্ডিয়া লিজেন্ডস উঠে গেছে রোড সেফটি সিরিজের ফাইনালে।
প্রথমে ব্যাট করা ভারত ঝড় তোলে শুরুতেই। শচীনের সঙ্গে ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন বীরেন্দর শেবাগ। ফলে উদ্বোধনী জুটিতেই ওভারপ্রতি দশ করে তুলে দলীয় ৫০ রান ছোঁয় ভারত। তবে দলীয় ৫৬ রানে শেবাগ ফেরেন ১৭ বলে ৩৫ রান করে। এরপর যেন কিছুটা ভাটা পড়ল ভারত ইনিংসে। পরের অর্ধশতক তুলতে খেলে ফেলে ৩৮ বল। তিনে নামা মোহাম্মদ কাইফ আউট হন ২১ বলে ২৭ রান করে।
তবে শচীন ছিলেন তার মতোই। তুলে নেন অর্ধশতক। ১৫তম ওভারে টিনো বেস্টের শিকার হওয়ার আগে ৪২ বলে তুলে নেন ৬৫ রান। বড় সংগ্রহের ভিত ততক্ষণে পেয়ে গেছে ভারত। সে ভিতের ওপর ইউসুফ পাঠান আর যুবরাজ সিংয়ের ঝড় ২১৮ রানের বিশাল পুঁজি এনে দেয় স্বাগতিকদের। চতুর্থ উইকেট জুটিতে তারা ৩৫ বলে তুলে নেন ৬৮ রান। যুবরাজ ২০ বলে ৪৯ রান তোলেন আর ইউসুফ সমান বলে ৩৭ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন।
জবাব দিতে নেমে উইন্ডিজ শুরুতেই হারায় উইকেট। তবে এরপরই ডুইন স্মিথ আর নারসিং দেওনারাইনের ঝড়ো ব্যাটিং কক্ষপথে ফেরায় ক্যারিবীয়দের। দুজনে ৫৮ বলে তুলে নেন ৯৯ রান। স্মিথ ৩৬ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেলে আউট হওয়ার সময় দলটির প্রয়োজন ছিল ৫৫ বলে ১০০ রান। এরপর কার্ক অ্যাডওয়ার্ডস ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই।
এরপরই মাঠে আসেন লারা। দেওনারাইনের সঙ্গে মিলে পরিস্থিতি সামলে দলকে সহজ জয়ের পথেই এগিয়ে নিচ্ছিলেন তিনি। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৪৩ বলে তুলে নিয়েছিলেন ৮০ রান। বিনয় কুমারের বলে আউট হওয়ার আগে লারা দারুণ সব শটে মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন ফেলে আসা সোনালি দিনগুলোকে। ২৮ বলে ৪৬ রান করে তিনি ফেরার পরই যেন ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় উইন্ডিজ। লারা ফেরার পর উইন্ডিজ ১৯তম ওভারে তুলতে পারে মাত্র ৮ রান।
শেষ ওভারে ক্যারিবীয়দের দরকার ছিল ১৭ রান। ইরফান পাঠানের আগুনে বোলিংয়ের সামনে দলটি তুলতে পারে কেবল ৪ রান। ফলে ১২ রানের সহজ জয় তুলে ফাইনাল নিশ্চিত করে ইন্ডিয়া লেজেন্ডস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইন্ডিয়া লেজেন্ডস ২০ ওভারে ২১৮/৩ (টেন্ডুলকার ৬৫, যুবরাজ ৪৯*, ইউসুফ ৩৭*; বেস্ট ২/২৫)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ লেজেন্ডস ২০ ওভারে ২০৬/৬ (স্মিথ ৬৩, দেওনারাইন ৫৯, লারা ৪৬; বিনয় কুমার ২/২৬)
ফলাফল: ইন্ডিয়া লেজেন্ডস ১২ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: যুবরাজ সিং