করোনার কারণে গত এক বছর ধরে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শর্ত সাপেক্ষে কওমি মাদরাসাগুলো খুলে দেয় সরকার। সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বাড়ার মধ্যেই কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স সমমান) পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ।
সোমবার (১৫ মার্চ) বোর্ডটির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়। রুটিন অনুযায়ী, ৩১ মার্চ পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হবে ৮ এপ্রিল। অর্থাৎ ৯ দিনে ১৩ বিষয়ে পরীক্ষা নেবে কওমি মাদরাসা বোর্ড। কোনো বিরতি ছাড়াই এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে শুক্রবারেও। কোনো কোনোদিন পরীক্ষা হবে দুইটি বিষয়ের।
হঠাৎ করেই এত অল্প সময়ে পরীক্ষার রুটিন ঘোষণা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরীক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার তারিখ ও রুটিন পুনর্বিবেচনা করার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে শুক্রবার এবং পরীক্ষার মাঝখানে একদিন বিরতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ দেশের কওমি মাদরাসাগুলোর সরকারস্বীকৃত ইসলামী শিক্ষাবোর্ড। সরকার ২০১৮ সালে ১১ এপ্রিল এই বোর্ডের অধীনে কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসকে (ইসলামী শিক্ষা ও আরবি) মাস্টার্সের সমমান মর্যাদা দেয়। জাতীয় সংসদের ২০১৮ সনের ৪৮ নম্বর আইনে এ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বর্তমানে কওমি মাদরাসার ছয়টি বোর্ডের সব কটি দাওরায়ে হাদিস কওমি মাদরাসা আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের অধীনে নিবন্ধিত। বোর্ডগুলো হলো- বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া, বাংলাদেশ আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস, বাংলাদেশ বেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া গওহরডাঙ্গা, আযাদ দ্বীনি এদারায়ে তালীম বাংলাদেশ, তানযীমুল মাদারিসিল কওমিয়া বাংলাদেশ ও জাতীয় দ্বীনি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ। এবার দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স সমমান) পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২২ হাজারের বেশি।
মো. মাহমুদুল হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) পরীক্ষার রুটিন এত অগোছালো এর আগে কখনও হয়নি। দশটি বিষয়ের পরীক্ষার সময় দিয়েছে মাত্র ৯ দিন। একদিনে দুই পরীক্ষা! শুক্রবারও খালি নেই। দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষার জন্য এমন রুটিন মোটেও গ্রহণযোগ্য না।
পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন, একটা পরীক্ষা দিয়ে এসে সাধারণত পরের দিন আরেকটি পরীক্ষা যেখানে চাপ হয়ে যায়, সেখানে এভাবে পরীক্ষার রুটিন সাজানো কতটা যৌক্তিক?