মুন্না ভাই খ্যাত সুপারস্টার সঞ্জয় দত্ত ছোট থেকেই নানা কাণ্ড ঘটিয়ে তার বাড়ির লোকদের পেরেশান করে ছাড়তেন। তার দুষ্টুমিতে পাগল হয়ে যেতেন মা ও বাবা ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের কিংবদন্তি দুই শিল্পী নার্গিস ও সুনীল দত্ত। একবার সুনীল দত্ত কাশ্মীরে আউটডোর শুটিংয়ে গিয়েছিলেন, সাথে ছিলেন নার্গিস ও ছোট সঞ্জয় দত্ত।
সঞ্জয় সারাক্ষণ তার মায়ের সাথে তর্ক জুড়ে দিলেন যে, তার বাবা সুনীল দত্ত যদি সিগারেট খেতে পারেন তবে তিনি কেন খেতে পারবেন না? এই কথা শোনার পর তার মা নার্গিসের হাতে খুব মার খান। কিন্তু অবাধ্য সঞ্জুকে দমানো যায় না। সে একই কথা বলে চলে। সেই শুনে সুনীল দত্ত বলেন, ঠিক আছে, ওকে সিগারেট খেতে দাও। একবার গলায় ধোঁয়া ঢুকলে আর কোনোদিন বায়না করবে না। তিনি ছোট্ট সঞ্জুর মুখে সিগারেট দিয়ে সেটা ধরিয়ে দিয়ে বললেন, এবার ধোঁয়া ভিতরে টেনে নাক দিয়ে ছাড়ো। বলে সুনীল দত্ত মুচকি মুচকি হাসতে থাকেন যে, এবার সঞ্জু ধোঁয়া সহ্য করতে না পেরে কেঁদে ফেলবে। কিন্তু ছোট্ট সঞ্জু দিব্যি সিগারেটে টান মেরে নাক দিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে সিগারেট ফুঁকে দিল। এই দেখে সুনীল দত্ত ও নার্গিসের চোখ কপালে উঠে যায়। এরপর সঞ্জয়কে উত্তম-মধ্যম ধোলাই দিয়ে বেশ কয়েক ঘণ্টা কান ধরে রোদে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।
সঞ্জয় তখন ছোট। তার বাবা তখনকার হিন্দি সিনেমার বিখ্যাত নায়ক সুনীল দত্তর কাছে বিখ্যাত প্রযোজক, পরিচালকরা আসতেন তাদের ছবিতে চুক্তিবদ্ধ করতে। সুনীল দত্তর ড্রয়িং রুমে বসে ছবি নিয়ে আলোচনা চলত। প্রযোজক-পরিচালকরা ধূমপান করে ড্রয়িংরুমের জানালা দিয়ে পাশের বারান্দায় ফেলতেন। আর সেই ফেলে দেওয়া সিগারেটগুলো বারান্দা থেকে কুড়িয়ে নিয়ে টান দিতেন ছোট্ট সঞ্জয় দত্ত। একদিন প্রযোজক-পরিচালকদের সাথে কথা বলতে বলতে হঠাৎ সুনীল দত্তর চোখ জানালার দিকে যেতেই উনি দেখেন, সেখান থেকে ধোঁয়া উঠছে। উনি আগুন লেগেছে ভেবে দৌড়ে বারান্দায় গিয়ে দেখেন, ছোট্ট সঞ্জু বারান্দায় আধশোয়া অবস্থায় মনের সুখে আধখাওয়া সিগারেটে সুখটান দিয়ে চলেছে। সুনীল দত্ত সঞ্জুর কান ধরে ভিতরে নিয়ে এসে তাকে ধমক দেন। এরপরে তাকে বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হয়।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এক সাক্ষাৎকারে তার ছোটবেলার এইসব দুষ্টুমির ঘটনাগুলো নিজের মুখে স্বীকার করে সেদিনের কথা ভেবে নিজেই হেসে ফেলেন সঞ্জয় দত্ত।